গাবতলীতে চাঁদাবাজি হয় না, দাবি হাট ইজারাদারের

গাবতলীতে চাঁদাবাজির কারণে গরুর মাংসের দাম বেশি বলে যে অভিযোগ এসেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজধানীর বৃহত্তম এই পশুর হাটের ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2019, 06:36 AM
Updated : 12 May 2019, 06:43 AM

রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে তারা দাবি করেছেন, গাবতলী পশুর হাটে কোনো চাঁদাবাজি হয় না। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনকে ভুল বুঝিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, গাবতলী হাটের চাঁদাবাজিই যদি কারণ হত তাহলে ঢাকার বাইরে মাংসের দাম বাড়ত না। আর চাঁদাঁবাজি হলে সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও রয়েছে।

এবার রোজায় ঢাকায় গরুর মাংসের দাম সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বেঁধে দিলেও সেই দামে বিক্রি হচ্ছে না। মাংস বিক্রেতারা বলছেন, গাবতলী হাটে চাঁদাবাজির কারণে মাংসের দাম কমানো যাচ্ছে না।

তাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনও সম্প্রতি বলেন, “চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে হয়তবা সাশ্রয়ী মূল্যে দেশি গরুর মাংস সরবরাহ করতে পারবে বিক্রেতারা।”

তার ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে গাবতলী পশুরহাট ইজারাদার ও পশু ব্যবসায়ীদের পক্ষে রোববার সংবাদ সম্মেলনে আসেন সানোয়ার হোসেন ও আবুল হাসেম।

সানোয়ার বলেন, “আমরা মেয়র মহোদয়ের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

“গাবতলী হাটে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি হয় না। সিটি করপোরেশন নির্ধারিত মূল্যেই সেখানে হাসিল নেওয়া হয়। এর ব্যত্যয় ঘটলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।”

মাংস ব্যবসায়ী রবিউল আলমকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে সানোয়ার বলেন, “তার কোথাও কোনো মাংসের দোকান বা ব্যবসা নেই এবং নিজেও ব্যবসা করেন না। কিন্তু রবিউল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে বিভ্রান্তিমুলক তথ্য দিয়ে ব্যবসায়ীদের চরম ক্ষতির মুখে ছেড়ে দিয়েছেন।”

মাংস বিক্রেতাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দিয়ে সরেজমিন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সানোয়ার বলেন, “তাহলেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে। কারা গাবতলীর গরুর হাট নিয়ে ষড়যন্ত করছে, তাও জানা যাবে।”

ঢাকায় বেঁধে দেওয়া দামে মিলছে না গরুর মাংস

গাবতলী পশুর হাটে বিক্রির সময় সিটি করপোরেশন নির্ধারিত হাসিল ছাগলের জন্য ৩৫ টাকা, গরুর জন্য ১০০ টাকা ও মহিষের জন্য ১৫০ টাকা নেওয়া হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সানোয়ার বলেন, “এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট গাবতলীতে চাঁদাবাজির কারণে যদি মাংসের দাম বৃদ্ধি পায়, তাহলে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় মাংসের দাম ঢাকার চেয়েও বেশি কেন?”

তিনি আরও প্রশ্ন করেন, মাংস ব্যবসায়ীরা গাবতলী হাটের বাইরে আরও হাট থেকে পশু কেনেন, তাহলে সেই পশুর মাংসের দাম কম নয় কেন?

গাবতলী হাটে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৮০০ পশু বিক্রি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এই হাট প্রায় ১৬ কোটি টাকা দিয়ে ইজারা নেওয়া হয়। কিন্তু সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ফি ছাড়া বাড়তি টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই।

ঢাকার আশপাশে বেশ কিছু হাট হওয়ায় এই হাটে বিক্রি আগের চেয়ে কমে গেছে জানিয়ে সানোয়ার বলেন, এছাড়া সরকারি নীতি অমান্য করে গাবতলী বেড়িবাঁধে ২৫-৩০টি গরুর ফার্ম থেকেও সরাসরি কিনছেন মাংস বিক্রেতারা।

“এই ক্ষতিটাও আমাদের উপর পড়ছে। তবুও গাবতলী পশুর হাট কর্তৃপক্ষ সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ফি ছাড়া কোনো বাড়তি টাকা নেয় না।”

বর্তমানে ভারত থেকে বৈধভাবে গরু আমদানি বন্ধ এবং পথে গরুর ট্রাকে চাঁদাবাজির অভিযোগ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সীমান্ত উন্মুক্ত ও চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে মাংসের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।