আগোরা’র কাকরাইল শাখা এবং মগবাজারে বেঙ্গল মিটের বিক্রয়কেন্দ্রে বুধবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রোজায় খাবারের মান এবং দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ভেজালবিরোধী এবং দ্রব্যমূল্য যাচাইয়ে এদিন এই সিটির অঞ্চল-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচটি অঞ্চলে অভিযান চালানো হয়।
বেলা ১১টায় সেগুনবাগিচা থেকে অভিযান শুরু হয়; প্রথম দিনে সব মিলিয়ে এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কাকরাইলের আগোরা সুপারশপে এবং আড়াইটার দিকে মগবাজারে বেঙ্গল মিটের বিক্রয়কেন্দ্রে যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আগোরাকে জরিমানা করা নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান বলেন, “বিদেশি গরুর মাংস নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছিল। এজন্য তাদের জরিমানা করেছি।
“বিদেশি গরুর মাংস ৫০০ টাকা করে বিক্রি করার কথা। কিন্তু তারা সেটা বিক্রি করছিল ৫২৫ টাকা করে।”
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দিয়ে দেশি না বিদেশি গরু, তা যাচাই করা হয় বলেও জানান তিনি।
পরে আগোরাও বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আগোরা’র ওই শাখার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম শাওন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা দেশি ষাঁড় গরুই বিক্রি করছিলাম। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত বলছে, সেটা ভারতীয় বকনা গরু।
“উনারা সঙ্গে করে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের লোকজন নিয়ে এসেছেন। তারা মাংস দেখে বলছেন, সেটা নাকি বোল্ডার গরু। কিন্তু সকালে আমরা দেশি ষাঁড় হিসেবেই তা রিসিভ করেছি।”
অপরদিকে গরুর মাংসকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করে বিক্রি করায় বেঙ্গল মিটকে জরিমানা করা হয় বলে জানান মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, “বেঙ্গল মিট প্রতি কেজি মাংস বিক্রি করছিল ৬৩৫ টাকা করে। এই মাংস হাড়সহ ৫২৫ টাকা বিক্রি করার কথা। কিন্তু তারা মাংসের দুইটা ক্যাটাগরি করে ফেলেছে। যেটা ৫২৫ টাকা বিক্রি করছে সেটাতে সব হাড় আর উচ্ছিষ্ট অংশ দিয়েছে।
“প্রিমিয়াম নামে আরেকটা ক্যাটাগারিতে হাড়ের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিয়ে কেজি ৬২৫ টাকায় বিক্রি করছে। তারা এটা করতে পারে না। হাড়সহ একটা ক্যাটাগরি থাকবে যেটা ৫২৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে।”
ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি বেঙ্গল মিটের বিপণন প্রধান আসাদুজ্জামান খান। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেঙ্গল মিটে কয়েক ধরনের মাংস বিক্রি করা হয়। সিটি করপোরেশন যে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সেই মানের মাংসও সেখানে ছিল।
“তারা নিশ্চয়ই কোনো আইনের মধ্যে থেকেই জরিমানা করেছেন। কিন্তু আমরা কাস্টমারের ডিমান্ড অনুযায়ী বিভিন্ন ক্যাটাগরির মাংস সরবরাহ করি। এখন সরকার যদি মনে করে যে, এটা করা যাবে না তাহলে তো আর কিছুই করার নেই। আমাদের প্রিমিয়াম মাংসটা কেনাই পড়ে ৬০০ টাকার বেশি। এটা ৫২৫ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব না।“
এদিন সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা শান্তিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এ সময় চারটি প্রতিষ্ঠানকেও সতর্ক করা হয়েছে।
অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে হাজারীবাগ এলাকায় পরিচালিত অভিযানে চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ হাজার টাকা, অঞ্চল-৪ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উদয়ন দেওয়ানের নেতৃত্বে কাজী আলাউদ্দিন রোড, টিপু সুলতান রোডে অভিযান চালিয়ে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামছুল হকের নেতৃত্বে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।