প্রায় ৪৪ লাখ শ্রমিকের পোশাক শিল্পে বিকাশের এই সেবার মাধ্যমে বেতন পরিশোধে মালিক ও শ্রমিকপক্ষের আগ্রহ বাড়ছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
তুলনামূলক ঝামেলামুক্ত এই সেবায় শ্রমিক ও মালিকপক্ষ উভয়েরই অর্থ ও সময় সাশ্রয় হচ্ছে বলে বিকাশের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, সামাজিক কল্যাণমূলক কাজের যে অভিপ্রায় থেকে তারা যাত্রা শুরু করেছিলেন, পোশাক কারখানায় পে-রোল প্রকল্প তারই একটি অংশ। ভবিষ্যতে বিকাশ থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা এবং বিকাশ একাউন্টের বিপরীতে ঋণ সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
২০১৫ সাল থেকে গত মার্চ পর্যন্ত ১৭০টি পোশাক কারখানা বিকাশের সেবার আওতায় এসে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে। বিকাশের মাধ্যমে বেতন পাচ্ছেন প্রায় দুই লাখ শ্রমিক। যে কোনো প্রতিষ্ঠানে পে-রোল ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বিকাশ নিজ উদ্যোগে একাউন্ট চালু করে দিচ্ছে।
বিকাশের পে-রোল একাউন্ট থেকে বেতন ক্যাশ আউট করতে গ্রাহককে কোনো ফি গুণতে হয় না বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
“হ্যান্ড ক্যাশ বেতন দিতে আগে মাসে একটা দিন চলে যেত। লাঞ্চ বিরতির পর কারখানায় কোনো কাজ হত না। ২৫ থেকে ৩০ জন লোক বেতন বিতরণের জন্য কাজ করতে হত। এখন বিকাশ চালু হওয়ার পর এসব ঝামেলা শেষ হয়েছে। বলা চলে বেতন বাবদ বার্ষিক চার লাখ ডলার সাশ্রয় হচ্ছে।”
সারা দেশে বিকাশের দুই লাখ এজেন্ট এবং ৭৮ হাজার মার্চেন্ট একাউন্ট রয়েছে। মোবাইল রিচার্জ, হাসপাতালের বিল দেওয়া, এনজিওগুলোর ঋণের কিস্তি জমা দেওয়ার মতো অনেক সুবিধা পান পোশাক শ্রমিকরা। বিকাশ একাউন্টে টাকা জমা থাকলে ৪ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যায়।
বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স নামের একটি সংগঠনের জরিপে দেখা যায়, একটি কারখানায় একজন শ্রমিক বেতন গ্রহণ করতে ১৮ মিনিট সময় ব্যয় হয়। সে হিসাবে ২৫০০ শ্রমিক কাজ করেন এমন কারখানায় বেতন বিতরণে ৭৫০ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। এসব হিসাব থেকে দেখা যায়, বেতন পরিশোধ করতে গিয়ে একটি কারখানায় প্রতি মাসে একজন শ্রমিকের পেছনে ৩৮ টাকা করে ব্যয় হয়।