এর ফলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রক্রিয়া জটিল হয়ে যাবে দাবি করে আপত্তি তুলেছেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।
পেট্রাপোল বন্দর ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেনাপোল বন্দরে ঢোকার আগে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ ছাড়া এতদিন ট্রাক থেকে পণ্য নামিয়ে পরীক্ষা করা হত না। একই নিয়মে বেনাপোল থেকে রপ্তানি পণ্য ভারতে।
“কিন্তু হঠাৎ করে পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, আমদানি-রপ্তানি পণ্যের চালান খালাস করে শতভাগ পরীক্ষার পর পেট্রাপোল বন্দরে ছাড়পত্র দেওয়া হব।”
পেট্রাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সন্তোষ কুমার বলেন, “এই নিয়মে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে। বিশেষ করে পচনশীল পণ্যের চালান পাঠানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ওই নির্দেশনার প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা নতুন চালানের এন্ট্রি বন্ধ রেখেছেন।”
ভারতীয় শুল্ক বিভাগের ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পণ্যের চালান ‘যথাযথভাবে’ পরীক্ষা করার এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল ২০০৫ সালের নভেম্বরে। কিন্তু তা অনুসৃত না হওয়ায় নতুন করে নোটিস দেওয়া হয়েছে।
“একইভাবে রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতীয় ট্রাক থেকে পণ্য খালাসের পর তা পরীক্ষা করে বাংলাদেশি ট্রাকে তুলতে হবে এবং কেবল এলইও (লেট এক্সপোর্ট অর্ডার) দেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশে বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, “ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো চিঠি দেয়নি। তবে ব্যবসায়ী ও ট্রাক চালকদের কাছ থেকে আমরা শুনেছি। এই নিয়ম চালু হলে বাণিজ্য সম্পাদনে সময় বেশি লাগবে।”
তবে ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট এক্সপোর্ট ইমপোর্ট সাব কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান পেট্রাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনারের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে এখনই না বসলে এ বন্দর দিয়ে বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়বে।”
বেনাপোল বন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন, “এমনিতেই ভারত থেকে পণ্য চালান আসতে ৫ থেকে ১৫ দিন লেগে যায়। এবার পেট্রাপোলে সকল পণ্যবাহী ট্রাক শতভাগ পরীক্ষা করলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।”
ভারতের সঙ্গে প্রতিবছর যে পরিমাণ পণ্য স্থলপথে আমদানি-রপ্তানি হয়, তার ৬৫ শতাংশই হয় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে ১৯ লাখ ৮৮ হাজার ৩৫৭ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে ভারত থেকে। এর বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৩ মেট্রিক টন পণ্য। আর এই বাণিজ্য থেকে রাজস্ব বাবদ ৪ হাজার ১৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা পেয়েছে সরকার।