সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা দাবির নিরীক্ষা ভিত্তিহীন: গ্রামীণফোন

যে নিরীক্ষার ভিত্তিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা দাবি করেছে, সেই নিরীক্ষাকে ভিত্তিহীন বলছে মোবাইল অপারেটরটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2019, 02:54 PM
Updated : 29 April 2019, 11:25 AM

মঙ্গলবার বিটিআরসিকে দেওয়া এক চিঠিতে গ্রামীণফোন এই ‘যুক্তিহীন’ নিরীক্ষা প্রত্যাহার করে যুক্তিপূর্ণ সমাধানে আসতে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিটিআরসি গত ২ এপ্রিল গ্রামীণফোনকে একটি দাবিনামার মাধ্যমে তাদের ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ৪ হাজার ৮৫ কোটি টাকা পরবর্তী ১০ কর্মদিবসের পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রামীণফোন বলছে, বিটিআরসি নিয়োগকৃত জেভিসিএ অব তোহা খান জামান অ্যান্ড কো. নামের একটি অডিট ফার্ম গ্রামীণফোনের ১৯৯৭ সালে যাত্রা থেকে শুরু করে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে ইনফরমেশান অ্যান্ড সিস্টেম অডিট পরিচালনা করে এই টাকা দাবি করে। এই অডিটে বিটিআরসি দাবিকৃত ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশ বা ৬ হাজার ১৯৪ কোটি টাকাই হলে সুদ, যা ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ধরা হয়েছে।

এর আগে বিটিআরসি আর একটি ইনফরমেশান অ্যান্ড সিস্টেম অডিটের মাধ্যমে ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সাল সময়কালে গ্রামীণফোনের কাছে থেকে ৩ হাজার ৩৪  কোটি টাকা পাবে বলে দাবি করে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সেই অডিটের অডিটর নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।

বিটিআরসি ১৯৯৭-২০১১ সময়কালের পূর্ববর্তী অডিটের দাবি নিয়ে আদালতে একদিকে তাদের আইনগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ সালের অডিটে এখন ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ কোটি টাকা দাবি করছে। ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়কালের জন্য  বিটিআরসি দুটি দাবি করছে।

গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, “নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সাথে অনেকবার আলোচনা এবং অডিটরকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা করার পরেও আমাদের যুক্তিগুলো অডিট প্রতিবেদনে প্রতিফলিত না হওয়া খুবই দুঃখজনক। অডিট চলাকালীন পুরো সময়ে আমরা বারংবার অডিট প্রক্রিয়ার ত্রুটিগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু আমাদের মতামতকে দাবিনামায় সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।”

গ্রামীণফোন জানায়, ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে অডিটের প্রতিবেদনের উপরে আনুষ্ঠানিক জবাব দিতে বলে। গ্রামীণফোন নির্ধারিত সময়ে সেপ্টেম্বরে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও যুক্তি দাখিল করে। কিন্তু বিটিআরসি তাদের দাবিনামায় শুধু ওই বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেওয়া গ্রামীণফোনের ব্যাখ্যা আমলে নিয়েছে।

রাজস্ব বোর্ডের পাওনা বিষয়ে গ্রামীণফোনের বক্তব্য হলে, রাজস্ব বোর্ডের হয়ে টাকা দাবি করার কোনো এখতিয়ার বিটিআরসির নেই।

ওই অডিটের দাবি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে ‘একটি সুষ্ঠ সমাধানের’ জন্য বিটিআরসিকে আবারও আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে গ্রামীণফোন।