শুক্রবার চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ২৭তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীদের মালামাল চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যাবে এবং চট্টগ্রাম কাস্টমসে ছাড় হবে। কিন্তু পারমিশন হবে ঢাকা থেকে, আমি এটার কোনো মানে দেখি না।”
এজন্য কর্তৃপক্ষের মানসিকতাকে দায়ী করেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে তিনবার এমপি নির্বাচিত হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “আমাদের মধ্যে এক ধরনের মানসিকতা আছে, সব কিছু ঢাকাকেন্দ্রিক করার। এজন্য যে কাজগুলো ঢাকায় না হলে সুবিধা হয়, সেগুলোও ঢাকায় হয়।”
ঢাকা ও চট্টগ্রাম দুই জায়গা থেকেই ‘রপ্তানির অনুমতি’ হওয়া উচিত মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমি ইমিডিয়েটলি বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সাথে কথা বলব, যাতে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়।”
বর্তমান সরকারের আমলে দেশের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশ অনেক বদলে গেছে। আমরা ইতোমধ্যে চাল রপ্তানি করেছি। মানুষ কখনও ভাবেনি বাংলাদেশ চাল রপ্তানি করবে।”
নেপালে ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশের সহায়তার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আগে দুর্যোগে পড়লে বাংলাদেশকে অন্যের কাছে হাত পাততে হত। এখন বাংলাদেশ অন্যদের দিকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারণের দাবি তুলে ধরে অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এরিয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এরিয়া বাড়ানো দরকার। সিটি করপোরেশন হওয়ার পর আর বাড়েনি। ঢাকা সিটি করপোরেশন বাড়লেও প্রতিষ্ঠার পর থেকে চট্টগ্রাম বাড়েনি। শহর ক্রমাগত বড় হয়। আমি মনে করি শহরের স্বার্থে, ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সবার একমত হওয়া দরকার।”
পাশাপাশি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন, দেশের বিমানবন্দরগুলোতে যে পরিমাণ যাত্রী ওঠানাম হয়, তার ৫২ শতাংশ হয় ঢাকায়, আর ১৭ শতাংশ চট্টগ্রামে।
“চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ঢাকার তুলনায় অবকাঠামোগত কিছুই নেই। এরপরও ১৭ শতাংশ যাত্রী চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে ওঠানামা করে। এ বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ জরুরি। প্রয়োজনে আরেকটি বিমানবন্দর করা দরকার।”
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হাটহাজারিতে একটি বিমানবন্দর ছিল, এখনও সে জায়গাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
হাটহাজারিতে বিমানবন্দর হলে সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় গড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর এবং চট্টগ্রাম শহর থেকে তা কাছে হবে বলে মত দেন তিনি।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা করার জন্য চট্টগ্রাম চেম্বারের নিজস্ব কোনো জায়গা না থাকার বিষয়টি তুলে ধরে ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, “প্রতি বছর মেলা বাবদ আমাদের ৪০ লাখ টাকা রেলওয়েকে দিতে হয়। সরকারি খাস জমি মেলার জন্য বরাদ্দ দিলে ভালো হয়।”
বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে বা বন্দরের কোনো জায়গা চিহ্নিত করে স্বল্পমেয়াদী লিজের জন্য আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, অনুমোদনের জন্য তিনি সহযোগিতা করবেন।
অন্যদের মধ্যে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার মাহাবুবর রহমান, ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।