পোশাকের রপ্তানিমূল্য স্বচ্ছ করতে সফটওয়্যার

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানিপণ্য তৈরি পোশাকের ‘সঠিক ও নির্ভরযোগ্য’ উৎপাদন ব্যয় হিসাব করতে একটি সফটওয়্যার চালু করেছে পোশাক খাতের আন্তর্জাতিক সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ফেয়ার ওয়্যার ফাউন্ডেশন- এফডব্লিউএফ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2019, 04:35 AM
Updated : 12 April 2019, 04:40 AM

বৃহস্পতিবার রাজধানীর লেইকশোর হোটেলে এক কর্মশালায় নতুন এই ‘লেবার কস্টিং কিট’ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এফডব্লিউএফ-এর প্রতিনিধিরা।

নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ আয়োজিত এই কর্মশালায় সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য সম্প্রতি মজুরি বৃদ্ধির পর কারখানায় নানা জটিলতার কথা তুলে ধরেন।

বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, “পোশাকখাতে মজুরি বৃদ্ধির পর সব কারখানায় উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু অনেক সময় ক্রেতারা সেটি উপলব্ধি করে সঠিক মজুরি দিতে চান না। মালিকদের পক্ষ থেকেও সঠিক যুক্তি দিয়ে প্রকৃত ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি উপস্থাপন করে দর কাষাকষি করা সম্ভব হয় না। এফডব্লিউএফ-এর এই নতুন সফটওয়্যার দুই পক্ষকেই একটি নির্ভরযোগ্য সমাধান দেবে।”

গত ডিসেম্বর থেকে দেশের পোশাক খাতে নতুন যে মজুরি কাঠামো কার্যকর হয়েছে, তাতে সাতটি গ্রেডে মজুরি বেড়েছে গড়ে ৫১ শতাংশ হারে।

এই মজুরি কাঠামো কার্যকর হওয়ার পর পণ্যের উৎপাদন খরচ ২৪ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশ বেড়েছে বলে গার্মেন্ট মালিকদের ভাষ্য।

এফডব্লিউএফ-এর ‘লেবার কস্টিং কিট’ এর হিসাবে ৫০ শতাংশ দক্ষতা সম্পন্ন একটি কারখানায় ৮ মিনিট সময় ব্যয়ে তৈরি একটি টি-শার্টের মজুরি খরচ বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। তবে এই ব্যয় বৃদ্ধির হার কারখানা, কাপড় ও দক্ষতাভেদে ভিন্ন হতে পারে।

এফডব্লিউএফ এর গবেষক দলের সদস্য ক্লস হোহেনজার বলেন, ২০১৩ সালে মজুরি বৃদ্ধির পর এর প্রভাব নিয়ে কারখানা মালিকদের এক জরিপে দেখা যায়, অনেক ক্রেতা মজুরি বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত খরচের দায় নিতে চান না।

“মুদ্রার অবমূল্যায়ন কিংবা ফেব্রিক্সের দাম বাড়লে পোশাক তৈরির বাড়তি খরচ ক্রেতারা মেনে নেয়। কিন্তু মজুরি বৃদ্ধির খরচের ক্ষেত্রে তারা দর কষাকষি শুরু করে। তখন তারা বাড়তি দাম দেওয়ার পরিবর্তে শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধির পরামর্শ দেয়।”

এই গবেষক বলেন, “পোশাকের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির বিপরীতে ক্রেতাদের কাছে পণ্যের দাম দিন দিন কমছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, প্রকৃতি মজুরির আলোকে দাম নির্ধারণ করা ক্রেতাদের দায়িত্ব। তবে সেটা শুরু করতে হবে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়। পণ্যের মোট উৎপাদন ব্যয়ে (এফওবি) শ্রমিকের অংশিদারিত্ব কতটুকু, সেটা সঠিকভাবে হিসাব করে বের করতে হবে।”