শ্রমিক কল্যাণের টাকা দেরিতে পৌঁছার অভিযোগ শুনলেন প্রতিমন্ত্রী

পোশাক শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের অর্থ প্রয়োজনের সময় না পাওয়ার অভিযোগ করলেন এক শ্রমিক নেত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2019, 01:50 PM
Updated : 9 April 2019, 01:50 PM

মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রানী খান মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের উপস্থিতিতে এই অভিযোগ তোলেন।

তিনি বলেন, “শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড গঠন করা হলেও তা শ্রমিকদের হাতে পৌঁছে অনেক দেরিতে। ফলে তা সঠিকভাবে শ্রমিকের কল্যাণে আসে না।

“বাচ্চা পেটে নিয়ে আবেদন করেন শ্রমিকরা, সেই বাচ্চা অনেক বড় হয়ে গেলেও টাকা হাতে আসে না। অনেকে অসুস্থ হয়ে আবার সুস্থ হয়ে উঠেন। কিন্তু টাকা পান তার পরে।”

পোশাকখাতে কর্মরত শ্রমিকদের চিকিৎসা ভাতা ও শ্রমিকের সন্তানদের মেধাবৃত্তি প্রদানে বিজিএমএইএ আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন রানী খান।

পোশাক শিল্পের রপ্তানি আয় থেকে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ হারে নিয়ে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে শ্রমিক কল্যাণ তহবিল কার্যকর হয়ে আসছে।

ইতোমধ্যে দুই হাজার ১৯৯ জনকে বীমাদাবি বাবদ ৪৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, “শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের জন্য সরকার উদ্যোগী হয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড গঠন করেছে। শ্রমজীবী মানুষের সন্তানরা যেন শ্রমিক না হয়, তারা যেন অফিসার হতে পারে সেই লক্ষ্যেই এই তহবিল।

“শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে এটা গঠিত। মালিকদের আয়ের উপর নির্ভর করে এটা বাড়তে থাকবে। শ্রমিক সঠিকভাবে শ্রম দিলে মালিকরা উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করে লাভ করতে পারলে এই তহবিল আরও বড় ও ব্যাপ্ত হবে।”

পোশাক শিল্পকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও সহিংসতা নিয়েও কথা বলেন খুলনার শ্রমিক নেত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।

তিনি বলেন, “কিছু লোক আছে, যারা মালিকের কল্যাণ চায় না, শ্রমিকের কল্যাণও চায় না। তারা শুধু শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে তাদের মাঝে সংঘাত বাড়ায়। কোনো কারখানা বন্ধ থাকলে কিংবা ভাংচুর করা হলে মূল ক্ষতিটি হয় শ্রমিকদের। মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন পরে।”

পোশাক শ্রমিকের মজুরি বাড়ানোর ফলে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে সরকারের কাছে ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দাবি করেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

মালিকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন প্রতিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বিকেএমইএর সহ সভাপতি মনসুর আহমেদ, বিজিএমইএর সহ সভাপতি মোহাম্মদ নাসির, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম উম্মুল হাছনা, শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনী ও জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টুও বক্তব্য রাখেন।

কারওয়ান বাজারে জিএমইএ ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ৯৭ জন শ্রমিককে চিকিৎসা বাবদ ৩১ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং শ্রমিকদের ৮২ জন সন্তানকে ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয় শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে।