সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা চেয়ে গ্রামীণফোনকে বিটিআরসির চিঠি

নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা চেয়ে চিঠি দিয়েছে টেলিযোগাযাগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2019, 05:52 PM
Updated : 2 April 2019, 06:00 PM

মঙ্গলবার গ্রামীণফোনের নির্বাহী বরাবর এ চিঠি পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান জহুরুল হক।

কত টাকা চাওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটি বিশাল অঙ্কের টাকা চেয়ে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।”

বিটিআরসির এক ঊর্ধবতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গ্রামীণফোনের কাছ থেকে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। এখানে বিটিআরসির পাওনা রয়েছে ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি এক লাখ টাকা এবং এনবিআরের পাওনা রয়েছে ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।

টাকা পরিশোধের জন্য গ্রামীণফোনকে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানান জহুরুল হক।

বিটিআরসির ওই কর্মকর্তা বলেন, গত বছর নিরীক্ষার ভিত্তিতে পাওনা টাকা চেয়ে গ্রামীণফোনের কাছে চিঠি দিলে তা রিভিজিট বা পূর্ণ মূল্যায়নের জন্য বলে অপারেটরটি। নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি পুনরায় মূল্যায়ন করে পুনরায় চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

তবে বিটিআরসির পুনর্মূল্যায়নেও আপত্তি রয়েছে গ্রামীণফোনের।

কোম্পানির এক বিবৃতিতে বলা হয়, যে অর্থ বিটিআরসি দাবি করছে, তার সঙ্গে তারা একমত নয়। এই নিরীক্ষায় তাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো প্রতিফলিত না হওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক।

নিরীক্ষা প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ছিল দাবি করে গ্রামীণফোন বলেছে, এই পাওনা নির্ধারণে নিজেরাই একটি নিরীক্ষা করাবে।

২০১৫ সালে অক্টোবরে নতুনভাবে নিরীক্ষা (ইনফরমেশন সিস্টেম অডিট) করার জন্যে একটি প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ দেয় বিটিআরসি।

চুক্তি অনুযায়ী, গ্রামীণফোনের ব্যবসা শুরুর পর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান বিটিআরসির নথির সঙ্গে অপারেটরদের আমদানি যন্ত্রপাতির দাম যাচাই করে দেখবে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া অপারেটরের দেওয়া প্রকৃত রাজস্বের হিসাব ঠিক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখবে বিটিআরসি ও এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থা। অপারেটরদের আর্থিক প্রতিবেদন যাচাই ও নিরীক্ষা আওতায় থাকবে।

২০১১ সালে দেশীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে হিসাব নিরীক্ষা করানোয় মোবাইল অপারেটরগুলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে গেলে নিরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।

২০১১ সালে ৩ অক্টোবর দেশীয় একটি কোম্পানি নিরীক্ষা করার পর গ্রামীণফোনের কাছে তিন হাজার ৩৪ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দেয় বিটিআরসি।

গ্রামীণফোন দেশীয় ওই নিরীক্ষার ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন তোলে। এরপর ওই চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করতে প্রতিষ্ঠানটি আদালতে আবেদন করে।

২০১১ সালের ২০ অক্টোবর গ্রামীণফোনকে দেওয়া বিটিআরসির চিঠির ওপর ‘স্থিতাবস্থা’ দেয় হাই কোর্ট।