আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও ‘রাইট অফ’ নীতিমালা শিথিল

ব্যাংকের মতো নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণ কমানোর একটা সহজ পথ বের করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2019, 06:11 PM
Updated : 1 April 2019, 06:11 PM

ঋণ অবলোপন (রাইট অফ) নীতিমালায় শিথিলতার মাধ্যমে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ অবলোপনের নীতিমালায় যে সংশোধন এনেছে, তাতে আর্থিক প্রতষ্ঠিানগুলো এখন তিন বছরের মন্দ মানের খেলাপি ঋণ ব্যালেন্স শিট থেকে বাদ দিতে পারবে।এতে খেলাপি ঋণ আদায় না হলেও তা কাগজ-কলমে কমবে।

এতদিন কোনো ঋণ মন্দ মানে শ্রেণিকৃত হওয়ার পাঁচ বছর পার না হলে তা অবলোপন করা যেত না।

অন্যদিকে অবলোপনের জন্য এখন আর আগের মতো শতভাগ প্রভিশন লাগবে না। আবার দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপনে মামলা করতে হবে না। এতদিন মামলা না করে অবলোপন করা যেত ৫০ হাজার টাকা।

বছরের পর বছর ধরে ব্যাংক ব্যবস্থায় মন্দ মানে শ্রেণিকৃত খেলাপি ঋণ স্থিতিপত্র (ব্যালেন্স শিট) থেকে বাদ দেওয়াকে ঋণ অবলোপন-রাইট অফ বলে। যদিও এধরনের ঋণ গ্রহীতা পুরো টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হন।

সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো নতুন নীতিমালায় বলা হয়, যে সব ঋণ হিসাবের বকেয়া দীর্ঘদিন আদায় বন্ধ রয়েছে, নিকট ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনাও নেই এবং যে সব ঋণ একাদিক্রমে ৩ বছর মন্দমানে খেলাপি হিসেবে রয়েছে এরূপ ঋণ হিসাব আর্থিক প্রতিষ্ঠঅনগুলো অবলোপন করতে পারবে।

পাশাপাশি ব্যাংক নিজস্ব বিবেচনায় মৃত ব্যক্তির নিজ নামে অথবা তার একক মালিকানাধিন প্রতিষ্ঠানের নামে গৃহীত ঋণ শ্রেণিমান নির্বিশেষে ও অর্থঋণ আদালত আইন-২০০৩ অনুযায়ী মামলাযোগ্য না হলে মামলা না করেই অবলোপন করতে পারবে। তবে একক মালিকানাধিন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির উপার্জনক্ষম উত্তরসূরী রয়েছে কিনা তা বিবেচনায় নিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে ২০০৩ সাল থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ অবলোপন করে আসছে।

ক্ষুদ্র ঋণে মামলার খরচের চেয়ে অনেকাংশে বকেয়া ঋণের পরিমাণ কম হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২০১৩ সালে মামলা না করেই ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপনের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকগুলোর জন্য একই ধরনের সার্কুলার জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সাল শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ ৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।