বিজিএমইএর নির্বাচন পাওয়াটাই প্রাথমিক সাফল্য: জাহাঙ্গীর

পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে নির্বাচন হওয়াটাকেই বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন স্বাধীনতা পরিষদের দলনেতা জাহাঙ্গীর আলম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2019, 02:41 PM
Updated : 21 March 2019, 02:45 PM

তিনি বলেছেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর বিজিএমইএর নির্বাচন হয় না। ২০১৫ সালে সংগঠনটির দায়িত্বে আসা সিদ্দিকুর রহমান নেতৃত্বাধীন পর্ষদের মেয়াদ কয়েক ধাপে বাড়িয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এবারও ভোট ছাড়াই সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছিল সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম।

“কিন্তু আমরা স্বাধীনতা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নির্বাচনী বোর্ড নির্বাচন আয়োজন করছে। এটাই আমাদের প্রাথমিক সাফল্য।”

বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্লাবে স্বাধীনতা পরিষদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণার সময় এসব কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, “অনেক বাধার পরও বিজিএমইএতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সদস্যরা অন্তত এবার ভোট দিতে পারছেন। ভোটাররা যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিক। পছন্দ মত নেতাকে নির্বাচন করুক। জয়-পরাজয়, এটা বিষয় না। গার্মেন্টস মালিকরা ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করছে সেটাই বড় বিষয়।”

৬ এপ্রিল নির্বাচন সুষ্ঠ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সব প্রতিকূলতা ও বাধা উপেক্ষা করে সরাসরি ভোটে স্বাধীনতা পরিষদের প্যানেল সাফল্য বয়ে আনবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

“যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে বিজিএমইএর নির্বাচন ছাড়াই নেতৃত্ব ঠিক করা হচ্ছে তাই এবার নির্বাচন আয়োজনটাই আমাদের মূল্য লক্ষ্য ছিল। শত শঙ্কাকে পেছনে ফেলে কর্তৃপক্ষ এখন নির্বাচনে যেতে বাধ্য হয়েছে। এটাই ছিল আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য।”

“আগে যাদের ভোটারদের কাছে যেতে হতো না এখন তারাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন।”

নির্বাচনের আগে যারা নিজেকে জয়ী বা সভাপতি ঘোষণা করে বসে আছে তারা ভোটারদের অবমাননা করেছে মন্তব্য করে জাহাঙ্গীর বলেন, “এমন ঘোষণার জন্য ভোটাররা নিশ্চয় রাগ করতে পারেন।”

নির্বাচনে নিজের নতুন এই প্যানেল জয়ের বিষয়ে কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হয়রানি ও শঙ্কার কারণে অনেকেই প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছেন না। তবে যেখানেই যাচ্ছি অভূতপূর্ব সাড়া ও সমর্থন পাচ্ছি। ভোটে গোপন ব্যালটে তারা সঠিক রায়টি দেবেন।”

প্যালেন পরিচিতি

স্বাধীনতা পরিষদ থেকে পরিচালক পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী ১৮ জন হলেন- ডেনিম প্রসেসিং প্লান্টের জাহাঙ্গীর আলম, ডিলাক্স অ্যাপারেলসের দেলোয়ার হোসেন, অলিরা ফ্যাশনসের হুমায়ুন রশিদ জনি, এলুরিং ফ্যাশনসের সাইফুল ইসলাম, নর্দার্ন করপোরেশনের রফিক হাসান, সাউথ ওয়েস্ট কম্পোজিটের হোসেন সাব্বির মাহমুদ, লিবাস স্টিচের শওকত হোসেন, হানজালা টেক্সটাইলসের খন্দকার ফরিদুল আকবর, ভ্যান হ্যাপেন ফ্যাশনের জাহাঙ্গীর কবির, জেইন অ্যাপারেলের জাহিদ হাসান, অ্যাপারেল বাংলা সোর্সিংয়ের শরিফুল আলম চৌধুরী, এ এস গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইলের কাজী আবদুস সোবহান, টপ টেক্স সোয়েটারের জহিরুল ইসলাম, জেড এ অ্যাপারেলসের কাজী মাহয্যাবিন মমতাজ, ডিকে গ্লোবাল ফ্যাশনওয়্যারের মাহমুদ হোসেন, ওয়েলমার্ট অ্যাপারেলসের আয়েশা আক্তার, পিয়াংকা ফ্যাশনের ওয়ালীউল্লাহ এবং গোল্ডেন ডাক অ্যাপারেলের ওমর নাজিম হেকমত।

 স্বাধীনতা পরিষদের অঙ্গীকার

>>পোশাক শিল্পের ভাবমূর্তি দেশ-বিদেশে তুলে ধরার জন্য লবিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে।

>>এই খাতের কোনো উদ্যোক্তা যেন ঝরে না পড়ে এবং নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয় সেজন্য রোডম্যাপ তৈরি করা হবে।

>>পণ্যের বহুমুখীকরণে দেশ-বিদেশি সহায়তায় একটি গবেষণা সেল গড়ে তোলা হবে।

>>বিজিএমইএর সব স্ট্যান্ডিং কমিটিকে কার্যকর করা হবে।

>>অনলাইনের মাধ্যমে ইউডি ইস্যু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

>>সাব কন্টাক্টিংয়ের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হবে।

>>মালিক শ্রমিকের দূরত্ব ঘুচাতে একটি সেতুবন্ধন সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হবে যাতে ভবিষ্যতে ক্ষতিকর পরিস্থিতি উদ্ভুত না হয়।

>>বর্তমানে একেক ক্রেতার একেক ধরনের কোড অব কন্ডাক্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উপযোগী করে একটি সমন্বিত কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়ন করা হবে।

>>বন্ড লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, ইআরসি, আইআরসিসহ সব ধরনের লাইসেন্সের মেয়াদ ন্যূনতম তিন বছর করা হবে।

>>গার্মেন্টস শিল্পকে সরাসারি ১০ শতাংশ প্রণোদনা দিতে সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।

>>অনেক সময় রপ্তানির পর অনেক ক্রেতা ডিসকাউন্ট দাবি করে, কার্যাদেশ বাতিল করে এবং মূল্য পরিশোধ করে না।  এসব সমস্যা সমাধানে বিজিএমইএ আইনগত সহায়তা দেবে।

>>রপ্তানি আদেশের সঙ্গে জড়িত সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠন যেমন, কাস্টমস, ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স এবং পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিজিএমইএকে মধ্যস্ততাকারী হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।