শীতের মাঝামাঝিতে ১০০ টাকার সবজিতে ব্যাগ ভরলেও এখন নতুন ওঠা অনেক সবজির দাম কেজিপ্রতি ৮০টাকা ছাড়িয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে গিয়ে সবজির দাম নিয়ে অনেক ক্রেতাকেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। বেশ কিছু দিন ধরে চড়া মাছের দাম নিয়েও রয়েছে হতাশা।
এদিন নতুন ওঠা বরবটি কেজিপ্রতি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, করলার দামও কেজিপ্রতি ৮০ টাকার কাছাকাছি। এছাড়া কেজিপ্রতি চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে শীতের সবজি ফুলকপি প্রতিটি ৪০ টাকা, বাঁধা কপি ২০-৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া কেজিপ্রতি শিম ৪০ টাকা, গাজর ও শসা ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা এবং চাল কুমড়া প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দামে ওঠানামা সব সময় থাকলেও সম্প্রতি দাম ‘একটু বেশিই’ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে সবজি বিক্রেতা আকতার বলেন, “বাজারে কোনো সবজিরই সরবরাহের ঘাটতি নেই। কিন্তু নতুন মৌসুমের শুরুর দিকে হওয়ায় দাম একটু বেশি।”
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারে এসে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মৌসুমের শুরুতে সবজির দাম একটু বেশি থাকে।
“কিন্তু কারওয়ান বাজারেই যদি এত টাকায় সবজি বিক্রি হয় সেটা অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত। বিক্রেতারা সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়েছেন।”
এ সপ্তাহে ডিম ও পেঁয়াজের দাম কমলেও রসুন এবং মাছ-মাংসের দাম বাড়তি।
লেয়ার মুরগির দামও গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা করে।
বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি মশিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ফার্মের মুরগির ডিম ও ব্রয়লার মুরগির বাজার খারাপ ছিল উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার কারণে।
“এখন সেইটা সমন্বয় হচ্ছে। খামারিরা কিছু দিন ধরে দাম পাচ্ছে। পাশাপাশি উৎপাদনটাও এখন চাহিদার তুলনায় কম।”
তবে বাজারে মুরগির দাম বৃদ্ধির পেছনে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজিও ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন তিনি।
“এক কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংসের পেছনে ১০৫ টাকা খরচ হয়, খামারিরা বিক্রি করেন ১১৫ টাকায়।”
ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও লেয়ারের লাল মুরগি প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আর সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা থেকে ১৯০ টাকায়।
গত সপ্তাহে এক পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা মিলছে ৯০ টাকায়।
তবে আমদানি করা রসুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “পেঁয়াজের দাম এখন অনেক কম। মধ্যম মানের পেঁয়াজ ১৫ থেকে ১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
“আমদানি রসুনের দাম গত এক মাস ধরে ধাপে ধাপে বাড়ছে। কোথাও কোথাও রসুন এখন একশ টাকারও বেশি।”
১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ হওয়ায় এই মাছের দাম কেজিতে অন্তত দুইশ টাকা বেড়েছে।
ইলিশ রক্ষায় পদ্মা, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর নির্দিষ্ট এলাকায় আগামী দুই মাস সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকছে।
এই বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে সাতশ টাকায় আর গরুর মাংস যথারীতি পাঁচশ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশ মাছের পাশাপাশি অন্যান্য মাছও কিছুটা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। রুই মাছ কেজিপ্রতি ২২০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা, শিং মাছ ৬০০ টাকা, মাগুর মাছ ৫০০ টাকা, টাকি মাছ আড়াইশ টাকায় বিক্রি হয়।
একজন মাছ বিক্রেতা বলেন, গত তিন দিন ধরে শিং ও মাগুর মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে অন্তত ৫০ টাকা।
তবে আগের মতোই আড়াইশ টাকায় কার্পু এবং দেড়শ টাকায় পাঙ্গাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে কারওয়ান বাজারে।