‘নগদ’ চালু করল ডিজিটাল নিবন্ধন

ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’ ডিজিটাল কেওয়াইসি নিবন্ধন চালু করেছে। ৩০ সেকেন্ডেই সম্পন্ন হয়ে যাবে এই নিবন্ধন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2019, 06:38 PM
Updated : 23 Feb 2019, 06:38 PM

শুক্রবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া উদ্বোধন করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের মানুষকে সহজে মানসম্পন্ন আর্থিক সেবা দিতে ডিজিটাল কেওয়াইসি নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করেছে নগদ। আর্থিক স্বাধীনতা প্রদানের ধারণা নিয়ে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ বাংলাদেশে প্রথম ডিজিটাল আর্থিক এই সেবা নিয়ে এসেছে।

গ্রাহকদের জন্য ঝামেলাহীন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে ডিজিটাল কেওয়াইসি নিবন্ধন উন্মোচন করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ক্রেতাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিবন্ধন করা মোবাইল ফোন নিয়ে আসতে হবে। গ্রাহকের ছবি ও পরিচয়পত্রের তথ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় রিয়েল টাইমে নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে।

কেওয়াইসি আবেদন পত্রের নির্দিষ্ট ঘর স্বয়ংক্রিয় স্ক্যানিং প্রক্রিয়ায় পরিচয় পত্রের তথ্য থেকে পূরণ হবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রাহকের জন্য এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ৩০ সেকেন্ডেরও কম সময়ে।

কেওয়াইসি মানে হচ্ছে-  ‘আপনার গ্রাহক জানুন’। ব্যাংক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এটি বেশি ব্যবহত হয়ে থাকে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার মন্ডল এবং নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বক্তব্য রাখেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশের মানুষের সুবিধার্থে সরকার স্বপ্রণোদিতভাবে নানা ধরনের সেবা নিয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের ভিত্তিতেই এসেছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সেবা -নগদ।

মন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফাইন্যান্সিংয়ে সারা পৃথিবীকে চমকে দেওয়ার মতো অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। দিনে এক হাজার ২৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়।

“আরও বিস্ময়কর জিনিস হচ্ছে এক হাজার ২৪ কোটি টাকার লেনদেনের মধ্যে এক টুকরো কাগজ ব্যবহৃত হয় না। এটি আসলে ভাবার জন্য বিশাল রকমের একটি খোরাক।”

“আপনি যদি মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে গতি রাখতে চান তাহলে প্রতিযোগিতা রাখতে হবে। এই প্রতিযোগিতা নগদ তৈরী করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।”

তিনি বলেন, “আমাদের প্রচন্ড রকমের সম্ভাবনা আছে। এই সম্ভাবনা এর আগে কোনও দিন পায় নি। তবে এই সম্ভাবনার জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। নতুন প্রজন্মকেই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।”

মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আমরা কেবলমাত্র ফোরজিতে পৌঁছেছি। এটি যখন ফাইভজিতে রুপান্তরিত হবে তখন কি পরিবর্তন হবে তা আমার মনে হয় না আমরা এখনো ধারণা করতে পারছি।”

“সুতরাং ওই পরিবর্তনের সঙ্গে আমার খাপ-খাওয়ানোর জন্য আমাকে কি করতে হবে, কি কি টেকনোলজি ইনভল্ব করবে সেটি যদি আমাদের নতুন প্রজন্ম ধারণ করতে পারে, তাহলে আমাদের পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ হওয়া কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।”

তথ্য, জ্ঞান এবং সৃষ্টিশীলতা দিয়ে তরুন প্রজন্মকে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “টেলিযোগাযোগ বিভাগে আমরা যে গতিটা সঞ্চার করতে পেরেছি তা যদি চলমান রাখতে পারি, তাহলে আমাদের দিকে বাঁকা চোখে তাকানোর অবস্থা আর ২১ সালের পর থাকবে না।”

“আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি আমাদের ডাক বিভাগ নিশ্চিতভাবেই ডিজিটাল ডাক বিভাগ হবে।”

সুশান্ত কুমার মন্ডল বলেন, আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একশ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে ডাক বিভাগের। দেশজুড়ে ডাক বিভাগের ৯ হাজার ৮৮৬টি ডাকঘর এবং এর কর্মি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দ্রুত এই ডিজিটাল আর্থিক সেবা পৌছে দেয়া হবে।

নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, দেশের যেসব মানুষ আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে রয়েছে তাদের আর্থিক স্বাধীনতা প্রদানের লক্ষ্যেই নগদ কাজ করে যাচ্ছে।