মাছ-মাংসের দাম আরও বেড়েছে

সপ্তাহ ঘুরে রাজধানীর বাজারগুলোতে আরেক দফা দাম বেড়েছে মাছ-মুরগির। মাছের কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত এবং ব্রয়লার মুরগি কেজিতে দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। তবে অপরিবর্তিত আছে লেয়ার ও দেশি মুরগির দাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2019, 07:46 PM
Updated : 15 Feb 2019, 07:46 PM

অন্যদিকে কাঁচাবাজারগুলোতে পেঁয়াজের কেজিতে পাঁচ টাকা এবং অধিকাংশ সবজি কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও, শাহাজাহানপুর, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে; যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা।

গত এক মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে রামপুরা বাজারের মুরগি বিক্রেতা শাহ আলম জানিয়েছেন।

তবে লেয়ার মুরগি গত দুই সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত দাম ১৯৫ থেকে ২০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়েনি ‘পাকিস্তানি’ মুরগি ও দেশি মুরগির। ‘পাকিস্তানি’ মুরগি প্রতি কেজি ২৮০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি।

মুরগি ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, “গত তিন-চার সপ্তাহ থেকে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে। জানুয়ারির শুরুর দিকেও এ মুরগির কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় এভাবে দাম বাড়ছে।”

গত সপ্তাহে প্রতি কেজি রুই মাছ সবচেয়ে কম দাম ২২০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ২৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে গত সপ্তাহের মতো বড় আকারের রুই মাছ ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায়।

অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে তেলাপিয়া মাছের দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি।

তবে টেংরা মাছ, শিং, বোয়াল, চিতল মাছসহ অন্যান্য মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

টেংরা মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা; আকার ভেদে ছোট চিংড়ি ৫৫০ টাকা এবং অন্যান্য চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা।

শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং চিতল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

শান্তিনগর বাজারের ক্রেতা মো. শফিউল্লাহ বলেন, “মাছ, মাংস, মুরগিসহ সব কিছুর দামই তো চড়া। বাজারে এত দিন তো মোটামুটি স্বস্তি ছিল, বোধ হয় দাম আরও বাড়বে। তবে এখনই কর্তৃপক্ষকে উচিত জোরালোভাবে বাজার মনিটর করা।”

দাম বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে একই বাজারের মাছ বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, “বহুদিন ধরে বৃষ্টি-বাদল নাই, নদী-বিলে মাছ ধরা পড়ছে কম, যে কারণে বাজারেও মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।”

বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে পাঁচ টাকা। একই সাথে বেড়েছে কাঁচামরিচের দামও।

নতুন দেশি পেঁয়াজ বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহ ছিল ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা। প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা। গত সপ্তাহে বিভিন্ন বাজারে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে।

পেঁয়াজের দাম নিয়ে পাইকারি বিক্রেতা আকবর আলী বলেন, “এখন বড় বড় ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ মজুদ করার সময় এসেছে। তারা সারা বছরের জন্য পেঁয়াজ মজুদ করবেন, এ কারণে এর প্রভাব কিছুটা বাজারে পড়েছে।”

বাজারে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, বেগুন, গাজর, মুলা, নতুন আলু, বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ভরপুর থাকলেও অধিকাংশ সবজির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজির মধ্যে অধিকাংশ সবজি বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে কোনো সবজিই ২০ টাকার নিচে মিলছে না।

বাজার ভেদে শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা। গত সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপির দাম বেড়ে হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

বাজারে নতুন আসা কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে চিচিঙ্গা ও করলা। প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। ধুন্দুলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

তবে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো ও নতুন আলু। আগের মতো পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা। আর নতুন আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা বাজারের শাক-সবজি বিক্রেতা মো. সোহেল বলেন, “যে শিম প্রতি পাল্লা (পাঁচ কেজি) পাইকারিতে দাম ছিল ১০০ টাকার মধ্যে, তা বেড়ে এখন ১৫০ টাকা। টমেটোর পাল্লা ছিল ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, তা বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। এই জন্য খুচরা বাজারেও দাম বেড়েছে।”