সোনাহাট স্থলবন্দরে আমদানি বন্ধ ১৮ দিন

ভারতীয় অংশে জটিলতার কারণে কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে ১৮ দিন ধরে আমদানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে এ বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিআহসান হাবিব নীলু, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2019, 02:04 PM
Updated : 14 Feb 2019, 02:04 PM

গত ২৮ জানুয়ারি থেকে এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও পাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে।

ভারত থেকে এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন অন্তত দেড় হাজার মেট্রিক টন পাথর ও কয়লা আমদানি হয়। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক। তারা বেকার হয়ে পড়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে। 

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতীয় অংশে ব্যবসায়ীরা সরকারি ঘোষণার চেয়ে অতিরিক্ত পাথর ও কয়লা ট্রাকে তুলে বাংলাদেশে পাঠাতো। এ কারণে তাদের কয়েকটি সেতু ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভারতীয় গণপূর্ত বিভাগ ওভারলোডিংয়ে আপত্তি জানায়। এতে গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ভারতীয় সড়ক দিয়ে ওভারলোডেড ট্রাক চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সোনাহাট স্থল বন্দর হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি হামিদুল ইসলাম বলেন, বন্দরটি চালু হওয়ার পর এই অঞ্চলের প্রায় দুই হাজার মানুষজন বন্দরে লোড-আনলোডসহ অন্যান্য কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।

“এ অবস্থায় প্রায়শঃই পণ্য না আসায় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকছে। এতে শ্রমিকরা এখন পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছে।”

সোনাহাট স্থল বন্দর আমদানি-রপ্তানি কারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বন্দরটি চালু করার পর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসা শুরু করে; কিন্তু ভারতীয় প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবে এলসি করেও কয়লা ও পাথরের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়।

“গত মাসের ২৮ তারিখ থেকে মালামাল আসছে না ভারতীয় অংশে জটিলতার কারণে।”

সোনাহাট স্থল বন্দর সিএন্ডএফ সভাপতি সরকার রাকিব আহমেদ জুয়েল বলেন, সোনাহাট স্থল বন্দরের সকল ব্যবসায়ী লোন নিয়ে ব্যবসা করছেন। বছরের এই সময়টা ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য কয়লা এবং কনস্ট্রাকশনের জন্য পাথর চাহিদা বেশি থাকে বিধায় ব্যবসায়ীরা এই সময়ে কিছুটা লাভ করতে পারে।

সোনাহাট স্থল বন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “এই বন্দরটি চালু করার পর অনেক আশা নিয়ে আমরা ব্যবসা শুরু করি এবং দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসা শুরু করে; কিন্তু ভারতীয় প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবে এলসি করেও কয়লা ও পাথরের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়।”

সোনাহাট বিজিবি ক্যাম্প কোম্পানি কমান্ডার নায়েব সুবেদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভারতীয় অংশে বিভিন্নমূখী সমস্যার কারণে আমদানি বন্ধ রয়েছে; তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো সমস্যা না থাকায় মজুদকৃত পাথর-কয়লা বিক্রয় চলছে।

এ ব্যাপারে সোনাহাট স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের ওয়্যার হাউজ ইনচার্জ রবিউল আলম বন্দরে প্রায় সময় পণ্য আমদানি বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, এই বন্দরটি সচল থাকলে প্রতিদিন ১৪শ থেকে ১৫শ মেট্রিক টন পাথর ও কয়লা ভারত থেকে আমদানি হয়। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়; কিন্তু প্রায় সময় আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।

সোনাহাট স্থল বন্দরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদ হাসান বলেন, “ভারতের অভ্যন্তরীণ জটিলতার কারণে স্থল বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ১৮ দিন থেকে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরাও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।”