মাছ-মাংসের দাম বাড়ছে

সবজির দামে গত সপ্তাহের স্বস্তি এ সপ্তাহেও আছে, তবে মাছ-মাংসের দাম প্রতি কেজিতে পাঁচ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে রাজধানীর বাজারগুলোতে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2019, 03:52 PM
Updated : 8 Feb 2019, 04:01 PM

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগির দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি থেকে বেড়ে ১৫০ টাকায় পৌঁছেছে।আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২১০ টাকায়, যা গত শুক্রবারও ১৯৫ থেকে ২০৫ টাকা ছিল। 

গত সপ্তাহেও ২৬০ টাকায় এক কেজি ওজনের একটি পাকিস্তানি মুরগি পাওয়া যাচ্ছিল। এ সপ্তাহে ২৮০ টাকার নিচে তা মিলছে না। আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে।

শান্তিনগর বাজারের মুরগি বিক্রেতা মিজানুর রহমানের দাবি, ফার্ম থেকে বাজারে মুরগি আসছে কম, এ কারণে দাম বাড়ছে।

“গত তিন-চার দিন আগে হঠাৎ করে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। ফলে অন্যান্য মুরগির দামও কিছুটা বেড়ে গেছে।”

মুরগির দামের পাশাপাশি গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়েছে বলে জানালেন মালিবাগ, রামপুরা, খিলগাঁও, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা ও বাড্ডা কাঁচা বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা।

খিলগাঁও বাজারে মাংস কিনতে আসা ব্যবসায়ী সিনহারুল ইসলাম বললেন, গরুর মাংস কোনো বিক্রেতাই ৫০০ টাকার কমে বিক্রি করছে না। আর খাসির মাংসের কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।

তবে এ বাজারের মাংস বিক্রেতা আরজু মিয়ার দাবি, মাংসের দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একই রকম আছে। তারা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত দামেই মাংস বিক্রি করেন।

সিদ্ধেশ্বরী এলাকার বাসিন্দা আকবর আলী খান বলেন,“গত কয়েক মাস ধরেই মাছের দাম বেশি, এবার মাংসের দামও বাড়ল। বাজারের ওপর কোনো কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ নেই, এ কারণে কারবারিরা খেয়াল খুশি মত দাম বাড়াতে পারে।”

মাছের সরবরাহ কম হওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দাম ‘একটু চড়া’ বলে দাবি করলেন মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া।

তিনি বলেন, “আমরা যদি কম দামে কিনতে পারতাম তাহলে বিক্রিতেও কম রাখতে পারতাম।”

এ বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৫০০ টাকায়। পাবদা মাছের কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। আকার ভেদে ছোট চিংড়ি ৫৫০ টাকা এবং অন্যান্য চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা। 

শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং চিতল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেল এ বাজারে। 

তবে সবজির দামে খুব বেশি হেরফের হয়নি এ সপ্তাহে। টমেটো, বেগুন, গাজর, মূলা, শালগম, শিম, নতুন আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, পালং শাকসহ সব ধরনের শাক-সবজি গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানালেন।

করলা, লাউ, ধুন্দল ছাড়া অন্যান্য সবজি মিলছে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকার মধ্যে। বাজার ও মানভেদে করলার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা;  আকারভেদে প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৭০ টাকা এবং প্রতি কেজি ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

প্রতিটি ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকা এবং বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এ সপ্তাহেও। টমেটো ১৫ থেকে ৩০ টাকা এবং নতুন আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

নতুন ওঠা দেশি পেঁয়াজ গত সপ্তাহের মতই ২০ থেকে ২৫ টাকা আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কাঁচামরিচের কেচি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

প্রতি আঁটি লালশাক, পালং শাকসহ অন্যান্য শাক ৫ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।

কারওয়ানবাজারে পাইকারি হাটে অন্যান্য বাজারের চেয়ে আরো কিছু কমেই মিলছে সবজি। শিমের পাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। নতুন আলুর দাম পাল্লায় ৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা।

রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, “সবজির সরবরাহ এখনও ভালো, তাই দাম বাড়েনি। তবে শীতের সবজি শেষ হয়ে আসছে, দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে অবস্থা বদলাবে।”