‘লাল ফিতার’ দৌরাত্ম্য কতটা, দেখতে চান বাণিজ্যমন্ত্রী

বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য’ কতটা গভিরে গেছে, তা দেখতে চান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2019, 03:40 PM
Updated : 24 Jan 2019, 04:32 PM

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ইইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেনজি  টিরিংকের সঙ্গে এক বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। কিন্তু বিনিয়োগের পথে পথে অনেক বাধা।

“এই দপ্তর, সেই দপ্তর, ইজ অব ডুয়িং বিজনেসে পিছিয়ে পড়ার সমস্যা… বিজনেস সহজীকরণ নিয়ে একটা মিটিং হয়েছে। আগামী মার্চে আরও একটি মিটিং আছে।“

অতীতে যাই হোক না কেন, সামনে কোনো কাজ যেন আটকে না থাকে, সেই চেষ্টা করার কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

“আমি আসলে দেখতে চাই। লাল ফিতার কাজের মধ্যে আমি নেই। সোজা কথা, আমিতো গায়ে খাটা মানুষ, লাল ফিতা দেখলেই আমার মাথা গরম হয়ে যাবে। কাজ আটকে থাকবে কেন? যে কাজ আজকে করা সম্ভব, কালকের জন্য সেটা অপেক্ষা করব কেন?

‘লাল ফিতার গভীরতা’ দেখে নিতে চান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “এ জন্য আমাকেও একটি স্টাডি করতে হবে। লাল ফিতাটা কতটা গভীরে, সেটাও দেখতে হবে। আমরা চাই আমাদের দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসুক। আমরা এজন্য সবকিছু সহজ করতে চাই।”

তৈরি পোশাক খাতের এই উদ্যোক্তা বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে রিটার্ন নিয়ে যাওয়ার পথে অনেক বাধা আছে বলে বিদেশিদের ভাষ্য। কোথায় কোথায় সেই বাধা আছে, তা তিনি দেখতে চান।

“যারা এ দেশে বিনিয়োগ করবে তারাতো লাভ নিয়ে যাবেই। বাধা দেওয়া হলেতো তারা নিরুৎসাহিত হবে। এ বিষয়ে আমাদের কমিটিও কাজ করছে। দেখা যাক কি হয়।”

ব্যবসা পরিবেশের উন্নয়নে সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরও বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের ‘ডুয়িং বিজনেস’ সূচকে বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে মোটামুটি একই জায়গায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

২০১৯ সালের প্রতিবেদনে ব্যবসা করার পরিবেশের দিক দিয়ে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দেখানো হয়েছে ১৭৬ নম্বরে। অথচ বাংলাদেশকে ডিঙিয়ে আফগানিস্তান উঠে এসেছে ১৬৭ নম্বরে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এ দিক দিয়ে বাংলাদেশই সবার পেছনে। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, প্রতিযোগিতায় ভালো করতে চাইলে বাংলাদেশকে সংস্কারের গতি আরও বাড়াতে হবে।

সাংবাদিকরা বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ২০২০ সালে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা পর্যালোচনার বিষয়টি তিনি ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে দেখছেন কিনা।

উত্তরে টিপু মুনশি বলেন, “জীবনেতো প্রতিদিনই চ্যালেঞ্জ। তবে আমরা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আসছি। আমি মনে করি ইইউ আমাদের দীর্ঘমেয়াদী বন্ধু। জিএসপি রিভিউয়ে আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না।”

ব্রেক্সিটের কারণে বাংলাদেশ সমস্যার পড়বে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত রেনজি  টিরিংক বলেন, “ব্রেক্সিট হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থাকছে। ইউইর পলিসিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। তাই এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে ইইউর ব্যবসা-বাণিজ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন আসার কথা নয়।”

সম্প্রতি মজুরি কাঠামো নিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, “কর্মপরিবেশসহ সব বিষয়ে কমপ্লায়েন্স রাখতে হবে। এর জন্য অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স ও আইএলও কাজ করছে।”