চলতি বছরের নভেম্বরে সোহেল আর কে হুসেইনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত রোববার তিনি এক মাসের ছুটিতে যান। এর তিন দিনের মাথায় পদত্যাগ করলেন তিনি।
ব্যাংকের উদ্যোক্তা-মালিকদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় এমডির পদ থেকে সোহেলকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে; তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও দুপক্ষই তা অস্বীকার করেছে।
ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন “অনেক দিন ওনি সিটি ব্যাংকে এমডি ছিলেন। ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে ওনি আর আমাদের সঙ্গে থাকতে চাইছিলেন না। সে কারণে আমরা আমাদের এএমডি মাসরুর আরেফিনকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি।
পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় সোহেল আর কে হুসেইনকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে কায়সার বলেন, “এ অভিযোগ সত্য নয়। তিনি সিটি ব্যাংকে অনেক দিন ধরে আছেন। এমডি হিসেবেই ছিলেন পাঁচ বছরের বেশি। ভালো সম্পর্ক ছিলো বলেই এতো দিন ছিলেন।”
“এখন ওনি বলছেন কিছুদিন রেষ্টে থাকবেন। দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। সেটা তার একান্ত ব্যাক্তিগত ব্যাপার।”
“যেহেতু তিনি থাকবেন না, সে কারণেই পাইপলাইনে থাকা এএমডিকে এমডি করা হয়েছে। এখানে অন্য কোন বিষয় নেই।”
২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে সিটি ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন সোহেল আর কে হুসেইন।
গত রোববার হঠাৎ করেই তিনি এক মাসের ছুটিতে যান। বুধবার পদত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে সোহেল আর কে হুসেইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মিডিয়ায় সিটি ব্যাংক এবং আমাকে নিয়ে যে খবর প্রকাশিত হচ্ছে তা সঠিক নয়। আমার সঙ্গে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কোন সমস্যা হয়নি।
“এখন আমি কিছুদিন রেষ্টে থাকবো। দেড়-দুই মাস বিদেশে থাকব। তারপর ফিরে এসে অন্য কোন ব্যাংকে কাজ শুরু করবো। আর সেটা এই বছরেই করব। সেই প্ল্যান থেকেই রিজাইন করেছি।”
পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় পদত্যাগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সব সময়ই কাজ করতে গেলে মালিকদের সঙ্গে একটু এদিক-সেদিক হয়। কিন্তু তাতে সম্পর্ক খারাপ হয়; বনিবনা হয়নি সে রকম নয়।
আপনার সময়ে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ তথ্য ঠিক কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, “একদম মিথ্যে কথা। আমি যখন ব্যাংকের দায়িত্ব নেই তখন খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮.২ শতাংশ। এখন তা কমে ৫.৩ শতাংশে নেমে এসেছে।”
তিনি জানান, ২০১৩ সালে সিটি ব্যাংক ৯৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। ২০১৭ সালে সেই মুনাফা বেড়ে ৩৬৫ কোটি টাকা হয়েছে।
সোহেল হুসেইন ১৯৯০ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, ইষ্টার্ন ব্যাংকের পর ২০০৭ সালে সিটি ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে কাজ শুরু করেন।
১৯৯৫ সালে গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়।