যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে অস্থিরতারও ইঙ্গিত

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য বিরোধে সামায়িকভাবে বাংলাদেশ লাভবান হলেও তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অস্থিরতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2018, 06:17 PM
Updated : 22 Nov 2018, 06:17 PM

এ ধরনের সাময়িক সুবিধার আশায় বসে না থেকে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বাজার বৈচিত্রকরণের মাধ্যমে নিজেদের ভিত মজবুত করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘অপরচ্যুনিটিস ফর বাংলাদেশ এরাইজিং ফ্রম ইউএস-চায়না ট্যারিফ ওয়ার’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য  রাখেন সেলিম রায়হান।

তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে যে ট্রেড ওয়ার বা বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে, তা অপ্রত্যাশিত। কয়টি দেশ যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে এবং এটা কতদিন তা স্থায়ী হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে এর ফলাফল।

“স্বল্প মেয়াদে ‍যুক্তরাষ্ট্র এবং চায়না দুই দেশই এই ঘটনা থেকে ভোগান্তির শিকার হবে। বাংলাদেশের মতো দেশ সাময়িকভাবে হয়ত লাভবান হবে, চামড়া খাতও হয়তে কিছুটা লাভবান হবে। তবে এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে, সেটা বাংলাদেশের জন্যও শঙ্কার কারণ হবে।”

তিনি বলেন, “চায়নার উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে আমরা খুশি হই। কিন্তু বাংলাদেশের বাণিজ্যও যদি বেড়ে যায়, তাহলে এই দেশের উপরেও যে ডিউটি বাড়িয়ে দেওয়া হবে না, সেটা কী করে বোঝা যাবে? সুতরাং অস্থিরতার সুযোগে বাণিজ্য বেড়ে যাওয়া খুব স্বস্তিদায়ক নয়।

“বরং যেই বিষয়টি স্বস্তিদায়ক তা হচ্ছে এই পরিস্থিতিতে চায়না থেকে প্রচুর বিনিয়োগ আসবে বাংলাদেশ। এবং সেটা ইতোমধ্যেই আসতে শুরু করেছে।”

এই সময়ে বাণিজ্য বাড়াতে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠার উপর জোর দেন সেলিম রায়হান।

তিনি বলেন, “বাণিজ্য বাধা নয়, কিছু ডমিস্টিক ফ্যাক্টর আমাদেরকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছে। অবকাঠামো, লিড টাইম বা এ ধরনের বিষয়গুলোতে আরও বেশি নজর দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। কেবল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক আট লেইনে উন্নীত হওয়া চামড়া পণ্য রপ্তানিকে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করবে না। এর জন্য সার্বিক ইস্যুগুলোর দিকে নজর দিতে হবে।”

এপেক্স ফুটওয়্যারের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জুতা ও চামড়াজাত পণ্যের ৯৮ শতাংশ আমদানিনির্ভর। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ আসে চীন থেকে। বাণিজ্য যুদ্ধ এই জুতা শিল্পকে মোটেও আক্রান্ত করতে পারেনি। সুতরাং এখনও আনন্দিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।

নিজস্ব সক্ষমতর ওপর ভর করে ভবিষ্যতে রপ্তানি টার্গেট পূরণ করার কথা বলেন এই ব্যবসায়ী।

“আমাদের এখন প্রয়োজন অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও উৎপাদন সক্ষমতা। আমরা একটি নিমজ্জিত মার্কেটে শেয়ার বাড়ানোর প্রচেষ্টা করছি, এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।”