স্মার্টফোনের বাজার সম্প্রসারণে অবৈধ সেটকে বাধা দেখছেন কেলভিন

বাংলাদেশে স্মার্টফোনের বাজার সম্প্রসারণে অবৈধভাবে দেশে আনা সেটের (গ্রে মার্কেট) প্রাচুর্যকে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশে হুয়াওয়ে কনজ্যুমার বিজনেস গ্রুপের কান্ট্রি ডিরেক্টর কেলভিন ইয়াং।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2018, 12:48 PM
Updated : 18 Nov 2018, 01:16 PM

পাশাপাশি সেট আমদানিতে উচ্চ হারে করও বড় বাধা হিসেবে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

সম্প্রতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় এই অভিমত দেন কেলভিন ইয়াং।

গত অক্টোবরে নিয়োগ পাওয়া কেলভিন ঢাকা থেকে প্রযুক্তিপণ্য ও স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে বিজনেস গ্রুপের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা ও কৌশলগত পরিকল্পনা দিচ্ছেন।

বাংলাদেশে ডিভাইস মার্কেটের চ্যালেঞ্জগুলো কী কী জানতে চাইলে কেলভিন বলেন, “আগামীতে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে গ্রে মার্কেট। এক্ষেত্রে আমরা সরকারের কাছে সঠিকভাবে আইন প্রয়োগের দাবি জানাই। উচ্চ কর আরেকটি প্রধান অন্তরায়। যদি এটাকে সহনীয় মাত্রার মধ্যে রাখা যায় তাহলে আশা করছি, স্মার্টফোনের বাজার আরো সম্প্রসারণ হবে।”

বাজারে যেসব মোবাইল হ্যান্ডসেট আছে সেগুলোর প্রতি তিনটিতে একটিই নকল বা অবৈধ বলছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের হিসাবে প্রতি বছর এক কোটির বেশি অবৈধ ও নকল মোবাইল হ্যান্ডসেট বাজার আসছে। এগুলোর বাজার মূল্য প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা, আর এর পুরোটাই যাচ্ছে গ্রাহকের পকেট থেকে।

প্রতিটি সেট আমদানিতে তার মূল্যের ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও ৫ শতাংশ শুল্কসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ সরকারকে দিতে হয় বলে জানান হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীরা।

এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে হুয়াওয়ে ডিভাইসের ব্যবসা নিয়ে কেলভিন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে হুয়াওয়ের ১১টির বেশি স্মার্টফোন মডেল আছে, যেগুলোর দাম সর্বনিম্ন ৭ হাজার ৩৯০ টাকা থেকে শুরু হয়ে সর্বোচ্চ ৮২ হাজার  ৯৯০ টাকা।

“আমাদের পণ্যগুলো চার ক্যাটাগরিতে বিভক্ত, মেইট সিরিজ, পি সিরিজ, নোভা সিরিজ ও ওয়াই সিরিজ।”

বর্তমানে মোবাইল হ্যান্ডসেট মার্কেটের অবস্থা সম্পর্কে কেলভিন জানান, বাংলাদেশে মোট মার্কেট শেয়ারের প্রায় ৩৫ ভাগ জায়গা দখল করে আছে স্মার্টফোন এবং প্রতিবছর এই হার বাড়ছে। বিশেষভাবে দেশে ফোরজি আসার পর স্মার্টফোন বিক্রির হার আরো বাড়ছে। ন্যায়সঙ্গত দামের কারণে তরুণ থেকে মধ্যবয়সী প্রায় সব বয়সী মানুষ এখন স্মার্টফোন ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। ভবিষ্যতে শহর ও উপশহর পর্যায়ে স্মার্টফোনের বাজার আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আগামীতে বাংলাদেশ নিয়ে ব্যবসা পরিকল্পনা সম্পর্কে কেলভিন বলেন, “বর্তমানে দেশে ৩২০টির বেশি হুয়াওয়ে ব্র্যান্ড শপ ও প্রায় পাঁচ হাজার সেলস পয়েন্ট রয়েছে। আগামীতে আরও সেলস পয়েন্টের পাশাপাশি কাস্টমারদের প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য নতুন করে ফ্ল্যাগশিপ স্টোর খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

“বর্তমানে দেশব্যাপী হুয়াওয়ের ১৬টি সার্ভিস সেন্টার এবং ৬০টি কালেকশন পয়েন্ট রয়েছে। যেহেতু হুয়াওয়ে পণ্যের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে তাই গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা নতুন নতুন সার্ভিস সেন্টার খুলছি।”

১৮ নভেম্বর থেকে মেইট ২০ প্রো’র  প্রি-বুকিং

হুয়াওয়ের নতুন ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোন ‘হুয়াওয়ে মেইট ২০’  সিরিজ লন্ডন ও চীনে বাজারজাতের পর নভেম্বরেই বাংলাদেশের বাজারে আসছে।

কেলভিন বলেন, আগামী ১৮ নভেম্বর থেকে মেট ২০ প্রো এর প্রি-বুকিং শুরু হচ্ছে, যা ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ২৫ নভেম্বর থেকে এই স্মার্টফোন বাজারে পাওয়া যাবে। প্রি-বুকিং কাস্টমাররা আকর্ষণীয় পুরস্কার ও ডেটা বান্ডল অফার পাবেন ।

হুয়াওয়ের মেইট সিরিজের ফোনগুলোতে সর্বোচ্চ কার্যক্ষম সিস্টেম অন চিপ (এসওসি) কিরিন ৯৮০ ব্যবহার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এটি তৈরিতে ৭ এনম প্রসেসর, কর্টেক্স এ৭৬ ভিত্তিক সিপিইউ এবং মালি-জি৭৬ জিপিইউ ব্যবহার করা হয়েছে।”

এসওসি ফোনের গতি বৃদ্ধি করে ব্যবহারীকে নির্বিঘ্নে চালাতে সাহায্য করে। এর ৪০ ওয়াটের সুপার চার্জার, ১৫ ওয়াট ওয়ারলেস কুইক চার্জ এবং বড় আকারের ব্যাটারি ব্যবহারকারীকে সর্বোত্তম ব্যাটারি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা দেয়। এর ওয়ারলেস চার্জিং টেকনোলজিও রয়েছে।

বিশ্বের ১৭০টি দেশে হুয়াওয়ের পণ্য ও সেবা রয়েছে এবং বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ লোক হুয়াওয়ের পণ্য ও সলিউশন ব্যবহার করছে বলে জানানা কেলভিন।