টেকনাফ সোলারটেক এনার্জি উৎপাদনে

পরিবেশ দূষণ এড়াতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিচ্ছে যখন বিশ্বের সবাই; তখন বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের এই যাত্রায় বড় ভূমিকা রাখতে এসেছে টেকনাফ সোলারটেক এনার্জি লিমিটেড।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2018, 12:47 PM
Updated : 19 Sept 2018, 04:38 AM

বাংলাদেশে সৌর বিদ্যুত খাতে প্রথম আইপিপি কোম্পানি হিসেবে ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে টেকনাফ সোলারটেক এনার্জি। ২৮ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার এই কেন্দ্রটি দেশের প্রথম বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

 বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের ২০ মাসের মধ্যেই উৎপাদনে এসেছে টেকনাফ সোলারটেক এনার্জি।

২০ বছরের চুক্তি অনুযায়ী, সুর্যের আলোর সময় টেকনাফ সোলারটেক এনার্জি থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনবে পিডিবি।

টেকনাফ সোলারটেক এনার্জির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুহের লতিফ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবিকে ধন্যবাদ।

“বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে নবায়নযোগ্য জ্বালানির আরও প্রকল্পে ভবিষ্যতে সংযুক্ত থাকতে পারলে ধন্য হব।”

মধ্যম আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার।

এর আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় মোট বিদ্যুতের মধ্যে ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে।

নতুন সৌর আইপিপি কেন্দ্র চালু হওয়াকে ’খুবই ভালো’ বলে মন্তব্য করছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নতুন এ কেন্দ্রটি চালু হয়েছে এটা খুবই ভালো। এটা খুবই দ্রুত হয়েছে।”

গত বছরের অক্টোবরে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বাংলাদেশের প্রথম সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিন মেগাওয়াট ক্ষমতার ‘এনগ্রিন সরিষাবাড়ী সোলার প্ল্যান্ট লিমিটেড’ নামের ওই কেন্দ্রে জমি দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। বিনিয়োগ করেছে জার্মানির আইএফই এরিকসেন এজি, বাংলাদেশের কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড ও জুপিটার এনার্জি লিমিটেড।

দেশের বিভিন্নস্থানে সৌরভিত্তিক ৫৫৭ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন। নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৫৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও নয়টি কেন্দ্র।  এছাড়া ২১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন পরিকল্পনাধীন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব হবে কি না- এ প্রশ্নের উত্তরে আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমরা খুবই আশাবাদী। আগ্রাসী পরিকল্পনা নিয়ে আমরা অগ্রসর হচ্ছি।”

তেল, কয়লা ও অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে পরিবেশের দূষণ হওয়ার নবায়নযোগ্য জ্বালানির গুরুত্ব বাড়ছে বিশ্বজুড়ে।

টেকনাফ সোলারটেক এনার্জি নির্মাণ করা হয়েছে উপজেলার হ্নীলায় ১১৬ একর জমির উপর। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে বলে কোম্পানির তরফ থেকে বলা হয়েছে।

কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুহের লতিফ খান উদীয়মান ব্যবসায়ী হিসাবে এর আগে শিরোনামে এসেছিলেন; যিনি মাত্র ২১ বছর বয়সে দেশ এনার্জি নামে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলেন।