কাঁচা মরিচে ঝাল বাড়লো

সপ্তাহজুড়ে অধিকাংশ সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও সরবরাহ কমে যাওয়ায় রাজধানীতে কাঁচা মরিচের দাম আবারও বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2018, 12:32 PM
Updated : 14 Sept 2018, 12:32 PM

এছাড়া চাল, মাছ, মাংস এবং ডিমসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামে তেমন হেরফের হয়নি বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

শুক্রবার নগরীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার, রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচাসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচামরিচের দাম এক সপ্তাহে দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।

ঈদের আগে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি দেড়শ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকলেও ঈদের পর মাত্র ৪০ টাকায় নেমে আসে।

এরপর সপ্তাহের ব্যবধানেই শুক্রবার কাঁচামরিচের দাম আবারও কেজিতে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশকিছু এলাকায় হঠাৎ করে বৃষ্টি হওয়ায় কাঁচামরিচের দাম বেড়ে গেছে। বৃষ্টিতে অনেকের মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়েছে।

কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী সোহরাব আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত সপ্তাহে যে কাঁচামরিচ ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে, আজকের বাজারে তা ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

“বাজারে হঠাৎ করেই মরিচের সরবরাহ কিছুটা কমে গেছে, যে কারণে এর দাম বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছু কিছু এলাকায় ক্ষেতের মরিচ নষ্ট হওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে।”

এদিকে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে বেগুন, উস্তা, বরবটি, কাঁকরোল, করলা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, ঢেঁড়স আর লাউ।

বাজার ও মানভেদে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। উস্তার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা; চিচিঙ্গা, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি।

প্রতি কেজি পেঁপে আগের দামে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে করলা; ঢেঁড়স পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি।

তবে শিমের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে প্রতিকেজি শিম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে দাম কমে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টমেটো ও গাজরের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

গত সপ্তাহের মত পাকা টমেটো বাজারভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গাজরও বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি।

ছোট আকারের প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের দামেই; ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। পাতাকপিরও অপরিবর্তিত দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার মণ্ডল বলেন, “সবজির দামে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। সরবরাহ ঠিক আছে বলে দামও ঠিক আছে। বৃষ্টিপাত বেশি হলে সবজির দাম আবার বাড়াতে পারে।”

রাজধানীর পাইকারি সবজি বিক্রির কারওয়ানবাজারের বিক্রেতা মুখলেছুর রহমান বলেন, “দুয়েকটি সবজির দাম কমেছে ও বেড়েছে, তবে অধিকাংশ সবজি আগের দামেই বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর থেকেই এ দাম বজায় আছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে যদি বেশি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে সব সবজির দাম বাড়বে।”

পেঁয়াজের বাজার ঘুরে দেখা গেছে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে এই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যটি।

দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহের দামে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে; যা ঈদের আগে ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি বিক্রি হয়। আর ফার্মের ডিমের ডজন ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী মো. সোহেল বলেন, “কোরবানি ঈদের পর থেকেই বয়লার মুরগির দাম কমে ১২০ টাকায় চলে এসেছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই দামে মুরগি বিক্রি করছি।”

বাজারে চালের দামেও স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে বলে ক্রেতা ও বিক্রেতার জানিয়েছেন।

বাজারভেদে প্রতিকেজি সরু নাজির ও মিনিকেট চাল ৬০ থেকে ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাধারণ নাজির ও মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহের দামই বলে জানিয়েছেন রামপুরা বাজারের মায়ের দোয়া চাল বিতানের বিক্রেতা আবুল হাসান।

এছাড়া পাইজাম ও লতা চাল ৪৮ থেকে ৫২ টাকা কেজি ও স্বর্ণা (মোটা) ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগবাজারে স্থানীয় বাসিন্দা এনায়েত করিম বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের দাম অপরিবর্তিত আছে। ব্যবসায়ীদের তো ঠিক নাই আবার দেখা যাবে হঠাৎ করে দাম বেড়েও যেতে পারে।”