নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং এয়ারশোতে তাদের এই সিরিজের উড়োজাহাজ হিসেবে বিমানের আকাশবীণাকে বেছে নিয়েছে প্রদর্শনীর জন্য।
বোয়িং ও বিমান কর্মকর্তারা বলছেন, আকাশবীণা এখন বাংলাদেশে আসার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। সব ঠিক থাকলে আগামী ২০ অগাস্ট উড়োজাহাজটি ঢাকায় নামবে। তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে আকাশবীণাকে যুক্ত করে নেওয়া হবে বিমানের বহরে।
তার আগে ফার্নবোরো এয়ারশোতে বোয়িংয়ের ডিসপ্লের অংশ হিসেবে আকাশবীণার প্রদর্শনীর ফলে আগাম প্রচারের সুযোগ হওয়ায় বিমান কর্মকর্তারা দারুণ খুশি।
মঙ্গলবার হ্যাম্পশায়ারের ফার্নবোরো বিমানবন্দরের আকাশে নিচু দিয়ে উড়ে গিয়ে দর্শকদের মাথার ওপর চক্কর দেয় ‘আকাশবীণা’। কয়েকটি চক্কর দিয়ে আবার নেমে আসে রানওয়েতে।
এয়ারশোতে উপস্থিত বোয়িংয়ের প্রোডাক্ট মার্কেটিং (কমার্শিয়াল এয়ারলাইন্স) বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেমস ফ্রিটাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমানের সাথে আমাদের চমৎকার একটা পার্টনারশিপ আছে। বিমান এই এয়ারক্রাফট এখানে প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়ায় আমরা আনন্দিত।”
এয়ারশোর দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বিভিন্ন কোম্পানি মোট ৫৩০টি এয়ারক্রাফট বিক্রির অর্ডার পেয়েছে, যার মোট দাম ৯৫.৫ বিলিয়ন ডালার।
নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ক্রেতা, বিনিয়োগকারী এবং বিমান পরিবহন সংস্থার কর্মকর্তারাও অংশ নেন এই প্রদর্শনীতে। এয়ারশোর প্রথম পাঁচ দিন- অর্থাৎ ১৬ থেকে ২২ জুলাই বরাদ্দ কেবল ব্যবসার জন্য। শেষ দুই দিন থাকবে জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত।
বিমানের লন্ডন অফিস মঙ্গলবার ব্রিটিশ বাংলাদেশি সাংবাদিকদের ফার্নবোরো এয়ারশোতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আকাশবীণার মহড়া দেখার জন্য।
পরে বোয়িং কর্মকর্তারা এই উড়োজাহাজের বিভিন্ন অংশ ঘুরিয়ে দেখান সাংবাদিকদের। তাদের জানান বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা।
টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম এই উড়োজাহাজে রয়েছে যাত্রীদের জন্য নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা। যাত্রীরা ৪৩ হাজার ফুট উঁচুতে নিরবচ্ছিন্ন ওয়াইফাই সুবিধা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ পাবেন। এছাড়া কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল দেখা যাবে সরাসরি।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিমানবহরে ড্রিমলাইনার সংযোজন করে আমরা বাংলাদেশ বিমানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। নতুন রুট চালু করতে চাই, ভ্রমণকারীদের নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চাই।”
ঢাকা পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের এই নতুন এয়ারক্রাফটের উদ্বোধন করবেন বলে জানান তিনি।
যুক্তরাজ্যে বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, বোয়িং ৭৭৭ এ যেখানে ৪১৯টি আসন থাকে, সেখানে ড্রিমলাইনারের বিজনেস ক্লাসে ২৪টি সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড সিট এবং ইকনোমি ক্লাসে ২৪৭টি আসন রয়েছে।
“আসন কম হওয়ায় আপাতত লন্ডন-সিলেট-ঢাকা রুটে আকাশবীণা ব্যবহারের পরিকল্পনা নেই। তবে ভবিষ্যতে এই রুটে ফ্লাইট বাড়লে তখন ড্রিমলাইনারও চালানো হতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে চারটি ড্রিমলাইনারসহ মোট ১০টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য ২০০৮ সালে চুক্তি করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
সে অনুযায়ী, চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এবং দুটি ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ ইতোমধ্যে বিমানকে সরবরাহ করেছে বোয়িং।
প্রথম ড্রিমলাইনারটি অগাস্টে বিমান বহরে যুক্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়টি আসবে নভেম্বরে। এরপর আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে আরও দুটি ড্রিমলাইনার বাংলাদেশে পাঠাবে বোয়িং।