নতুন বাজেটে হতাশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীরা

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য উন্নয়নে বিভিন্ন সুপারিশের প্রতিফলন না পেয়ে হতাশ এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এমন বাজেটে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি হবে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2018, 12:55 PM
Updated : 21 June 2018, 11:43 AM

তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সাতটি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এমন মত ব্যক্ত করেন। তারা বিভিন্ন দাবি-দাওয়াও তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে সফটওয়্যার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, “ইন্টারনেটে ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ ভ্যাটসহ শুল্ক দেওয়া হচ্ছে, ইন্টারনেট থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স উঠিয়ে দিলে ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়া আরও এগিয়ে যাবে। ইন্টারনেটকে সহজলভ্য করতে হবে।”

ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম বলেন, “ইন্টারনেটের ওপর ২১.৭৫ শতাংশ ভ্যাট, সম্পুরক শুল্ক ও সারচার্জ গ্রাহকদের ওপর বোঝা হয়ে চেপে আছে।

“নাগরিক সেবা সহজলভ্য করতে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর থেকে সকল প্রকার কর প্রত্যাহারের আবেদন জানাই। ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর করারোপ ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পের পরিপন্থী।”

ইন্টারনেট সেবায় কয়েকটি যন্ত্রাংশে শুল্ক কমানোর দাবিও জানান হাকিম।

বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব মানিক বলেন, “যেখানে চার কোটি হ্যান্ডসেট ব্যবহার হয়, সেখানে কোনো কারণ নেই আমদানির। দেশে ফোরজি প্রযুক্তিতে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “২০১৭-১৮ সালের বাজেটে ঘোষিত সুবিধার কারণে কোম্পানিগুলো বিশাল বিনিয়োগ করে কারখানা স্থাপন করেছে, সেখানে মাত্র এক বছরের মধ্যে ১৫% ভ্যাট আরোপ করার কারণে পূর্ণাঙ্গ মোবাইল আমদানির খরচের চাইতে স্থানীয়ভাবে সংযোজিত মোবাইলের খরচ অনেক বেশি পড়বে। ফলে কোনোভাবেই এই সংযোজন শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না এবং বিনিয়োগকারীরা বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। তাই এই শিল্পের উপর ঘোষিত ১৫% মূসক প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি।”

হ্যান্ডসেট সহজলভ্য না হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি হবে জানিয়ে মানিক বলেন, “দেশে তৈরির জন্য বিনিয়োগ করা হয়েছে। ভ্যাট আরোপ করায় এখন দেশে সংযোজনে আমদানির চেয়ে বেশি খরচ পড়বে, এর ফলে অবৈধভাবে আমদানি বাড়বে। আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো এখানে আসার অপেক্ষায়, ভ্যাট প্রত্যাহার করা উচিত বিনিয়োগের জন্য।”

সংবাদ সম্মেলনে ‘আদার কম্পিউটার সফটওয়্যার’ আমদানির ওপর শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর যথারীতি আগের মতো বহাল রাখার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ফাইবার অপটিক কেবল, ওএলটি, ওএনইউ, ইথারনেট ইন্টারফেস কার্ড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুইচ, হাব, রাউটার, সার্ভার ব্যাটারির উপর বর্তমানে ২২.১৬% ভ্যাট ও শুল্ক আরোপিত রয়েছে; যেটা এ শিল্পের প্রসারে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।

একারণে তা কমিয়ে শূণ্য করার আবেদন জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির, ই-কমার্সভিত্তিক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের যুগ্ম সম্পাদক নাসিমা আক্তার, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি পরিচালক মো. আছাব উল্লাহ খান জুয়েল, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আমিনুল হক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।