সিএনজির দাম ২৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব কর্ণফুলীর

গণশুনানিতে ভোক্তা অধিকার সংগঠনের বিরোধিতার মুখেও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের (সিএনজি) দাম ২৫ শতাংশ বাড়াতে চায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2018, 06:17 PM
Updated : 19 June 2018, 06:17 PM

মঙ্গলবার রাজধানীর টিসিবি ভবন মিলনায়তনে গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের মূল্যহার ও বিতরণ মার্জিন বৃদ্ধির প্রস্তাবের উপর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) প্রস্তাব তুলে ধরে কর্ণফুলী গ্যাস।

তবে গণশুনানিতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ও সিএনজি স্টেশন মালিকদের প্রতিনিধি তাদের এই প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানালে কোনো উত্তর মেলেনি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিটির পক্ষ থেকে।

সিএনজির সঙ্গে বাণিজ্যিক ও গৃহস্থালি বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে ভাড়িত গড়ে ৭৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে কর্ণফুলী গ্যাস। একইসঙ্গে কোম্পানির বিতরণ মার্জিন বর্তমান ২৪ পয়সা থেকে ৮০ পয়সা বাড়িয়ে ১ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

শুনানিতে সিএনজির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশ্ন তুলে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, “ভোক্তা পর্যায়ে সিএনজির মূল্যহার বর্তমানে ৪০ টাকা। এলএনজির মূল্যহার ৩৩ টাকা, এলপিজির মূল্যহার ৫০ টাকা। এরপরও সিএনজির মূল্যহার ৪৮ টাকায় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। তা কি যৌক্তিক?”

মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানান বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন অ্যান্ড কনভারসন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূরও।

তবে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ কিংবা এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো জবাব দেওয়া হয়নি। কর্ণফুলী গ্যাসের আওতায় ৬৮টি সিএনজি ফিলিং স্টেশন আছে বলে জানানো হয় গণশুনানিতে।

গণশুনানিতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কর্ণফুলী গ্যাসের প্রস্তাব এবং এর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন এর উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রদ্যোত কুমার সাহা।

কর্ণফুলী গ্যাসের প্রস্তাবে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতে ২০৬ শতাংশ, সারে ৩৭২ শতাংশ, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ৬৬ শতাংশ, শিল্প খাতে ৯৩ শতাংশ এবং চা-বাগানে ৭৩ শতাংশ দাম বাড়ানোর কথা বলা হয়। গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক খাতকে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের বাইরে রাখা হয়েছে।

গ্রাহক পর্যায়ে এলএনজি নিতে অবকাঠামো নির্মাণ, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পেট্রোবাংলার অধীনে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ৬৭৫ কোটি টাকা ঋণ, মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিতরণ নেটওয়ার্ক নির্মাণ এবং আবাসিক গ্রাহকের প্রি-পেইড মিটার বসাতে ২৩৫ কোটি টাকা সুদসহ পরিশোধকে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের যৌক্তিকতা হিসাবে তুলে ধরা হয় গণশুনানিতে।

সেখানে কর্ণফুলী গ্যাসের প্রস্তাবের বিষয়ে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনও উপস্থাপন করা হয়।

এতে দেখা যায়, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে কর্ণফূলী গ্যাস কোম্পানির সব ধরনের ব্যয় বাদে ৩২১ কোটি টাকা মুনাফা ছিল। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে নীট রাজস্ব চাহিদা ইউনিট প্রতি ১৯ পয়সা। কিন্তু বর্তমানে তারা গ্রাহকের কাছ থেকে নিচ্ছে ২৪ পয়সা, যা চাহিদার চেয়ে ৫ পয়সা বেশি। এতে প্রতিষ্ঠানটির আগামী অর্থবছরেও ৪৫ কোটি টাকা লাভ হবে বলে প্রক্কলন করা হয়।

বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলামের সভাপতিত্বে শুনানিতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার, পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) মাহবুব ছরোয়ার, কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খায়েজ আহমদ মজুমদার বক্তব্য দেন।