পসার জমেছে ফুটপাতেও

ঈদের কেনাকাটায় রাজধানীর নামি শপিং মলগুলো ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট হলেও ফুটপাতের দোকানগুলোয় ক্রেতাদের চাপ কিছু কম নয়। দামে কম পাওয়ায় ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষও এখান থেকে সেরে নিচ্ছেন শেষ মুহূর্তের ঈদবাজার।

কাজী নাফিয়া রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2018, 07:41 PM
Updated : 13 June 2018, 07:41 PM

রাজধানীর গুলিস্তান, ফার্মগেইট, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া ও এর আশেপাশের এলাকা ঘুরে বুধবার এ চিত্র দেখা গেছে। দুপুরের পর থেকে নিউ মার্কেট ও গাউছিয়া এলাকার ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনায় বিক্রেতারাও ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন।

কেউ জুতা কিনছেন তো কেউ শার্ট। কামিজ, গহনা আর প্রসাধন সামগ্রীর চাহিদাও ছিল তুঙ্গে। অনেকেই কিনছিলেন ভ্যানিটি ব্যাগ, ছোট পার্স আর  বড় ব্যাগ।

গাউছিয়া ও নিউ মার্কেটের ফুটপাত এবং বাইরের দোকানগুলোর পাশাপাশি মাহমুদ ম্যানশন, প্রিয়াঙ্গন শপিং কমপ্লেক্স, নূরজাহান সুপার মার্কেট, গ্লোব শপিং কমপ্লেক্স, বদরুজ্জামান মার্কেট ও চন্দ্রিমা মার্কেটের ফুটপাত ক্রেতা সমাগমে মুখর দেখা গেছে।

চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনে জুতা বিক্রি করছিলেন সাইফুল্লাহ। শেষ সময়ে বাড়তি দাম না চেয়ে একদামেই জুতা বিক্রি করছেন তিনি।

“এখন কাস্টমার অনেক। দামাদামির টাইম নাই, একদামে যে নেওয়ার নিবে।”

সাইফুল্লাহর মতো ফুটপাতের অনেক বিক্রেতাই দ্রুত বিক্রির আশায় ‘একদামে’ বিক্রি করছিলেন বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী।

গাউছিয়ার সামনের ফুটপাতে দুইশ, তিনশ ও চারশ টাকায় বিক্রি হয় কামিজ। মেয়েদের ব্যাগ পা্ওয়া যায় একশ, দেড়শ ও চারশ টাকায়।

দেড়শ, দুইশ আর আড়াইশ টাকাতেই কেনা যায় জুতা।

মেয়েদের ওয়ান পিস কামিজ বিক্রেতা নিয়ামুল ইসলাম ঈদ করতে বৃহস্পতিবার রাতে চলে যাবেন গ্রামের বাড়িতে।

শেষ সময়ে সীমিত লাভে পোশাক বিক্রি করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন হাতে সময় নাই। কালকে রাতে বাড়িত চইলা যামু। তাই এক দামে সব বিক্রি কইরা দিতাছি। এইগুলা নিয়া তো আর দ্যাশে যাইতে পারমু না।”

‘২০-৩০ টাকা লাভ পাইলেই খুশি’ বলে জানালেন তিনি।

এদিকে ঈদের ছুটির একদিন হাতে থাকলেও সুবিধা অনুযায়ী অনেকেই বাড়িমুখে রওনা দিয়েছেন বুধবার। আর যাওয়ার আগ মুহূর্তে তারাও সেরে নেন ‘বাকি থাকা’ কেনাকাটা।

নিউ মার্কেটের বাইরের দোকান থেকে জুতা কিনছিলেন সায়মা হক। তিনি বলেন, “কাল সকালেই বাড়ি চলে যাব। কিছু কেনাকাটা বাকি ছিল। তাড়াহুড়া করে করতে হচ্ছে। যা ভিড়, ধাক্কাধাক্কি করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে হচ্ছে।”

ফার্মগেইট ও গুলিস্তানের বিপণিবিতানগুলোর তুলনায় ফুটপাতেই ছিল ক্রেতাদের ভিড়।

গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে ফ্রক কিনছিলেন রাজমিস্ত্রী আজগর। তিনি ভোলা যাওয়ার জন্য মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে রওনা হলেও পোশাক পছন্দ হওয়ায় কিনে নিচ্ছেন।

আজগর বলেন, “সদরঘাট থেইকা লঞ্চে উঠুম। ফ্রকটা চোখে লাইগা গেছে মাইয়ার। তাই কিনা নিতাছি।”

“দেখলাম দামও কম। তাই যেইগুলা বাকি আছে, কিন্না লঞ্চে উঠুম।”

ফার্মগেইট সুপার মার্কেট ও সেজান পয়েন্টে বিক্রি ভালো হলেও কম দামে পণ্য পাওয়ায় ক্রেতাদের নজর ছিল ফুটপাতেই।  ইফতারের আগ পর্যন্ত বিপণিবিতানগুলো ও ফুটপাতে ক্রেতাদের চাপ বেশি থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে তা কমতে থাকে।