চাল আমদানিতে ফের ২৮% শুল্ক

সঙ্কটে পড়ে গত বছর চাল আমদানিতে শুল্ক প্রায় তুলে দেওয়া হলেও সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার পর এখন আগের শুল্ক হার পুনরায় আরোপ করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2018, 12:47 PM
Updated : 7 June 2018, 04:53 PM

বৃহস্পতিবার সংসদে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনের সময় চাল আমদানির উপর আবারও ২৮ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, “কৃষকের উৎপাদিত ধান চালের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে চাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে সর্বোচ্চ আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ৩ শতাংশ পুনঃআরোপ করা হয়েছে।”

গত বছর এপ্রিলের শুরুতে আগাম বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসলহানি ও মজুদ তলানিতে নেমে আসায় চাল আমদানিতে শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছিল।

আমদানির কারণে এখন চালের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না বলে কৃষকদের অভিযোগ।

বাজেটে কৃষিখাতের প্রধান উপকরণ বিশেষ করে সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে ‘শুন্য’ শুল্কহার অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত গম, ভূট্টা, আলু ও কাসাভা থেকে উৎপাদিত স্টার্চের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিউটি ১০ শতাংশ হারে নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

কৃষিতে ভর্তুকি বেড়েছে

সংশোধিত বাজেটের তুলনায় কৃষিখাতে ভর্তুকি বাড়ানো হয়েছে; যা মোট বাজেটের প্রায় দুই শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষিখাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৬ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা; এরমধ্যে ভর্তুকি হিসেবে ৯ হাজার কোটি টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

চলতি বছরের ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার মূল বাজেটে কৃষি খাতে ভর্তুকি ৯ হাজার কোটি টাকা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়।

সংশোধিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের ৫০ শতাংশ বেশি ভর্তুকির প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাঁধ নির্মাণ ও জলাভূমি রক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে

আগামী অর্থবছরে (২০১৮-২০১৯ সালে) জলাভূমি উদ্ধার, উপকূলীয় ভূমি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণসহ এই খাতের উন্নয়নে ৭ হাজার ৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

গতবছরের চেয়ে এবার প্রায় ১০০০ কোটি টাকা বেড়েছে বরাদ্দ।

প্রস্তাবিত বাজেটে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে এ বছর ৭ হাজার ৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এই খাতে ৫ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হলেও পরে তা বাড়িয়ে ৬ হাজার ১২২ কোটি টাকা উন্নীত করা হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, নদীর নাব্যতা বাড়ানো, ভাঙন হ্রাস ও শুষ্ক মৌসুমে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে ৪৭০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং; সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য ৫৩০ কিলোমিটার সেচ খাল খনন ও পুনঃখনন এবং ৮৬০টি সেচ স্ট্রাকচার নির্মাণ ও মেরামত, ৩টি ব্যারেজ ও রাবার ড্যাম নির্মাণ; বন্যা-লবণাক্ততা-জলাবদ্ধতা হ্রাসের জন্য ২৪০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও উপকুলীয় বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত, ৭১০টি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ ও মেরামত, ১ হাজার ৫২৫ কিলোমিটার নিষ্কাশন খাল খনন ও পুনঃখনন কাজ সম্পন্ন করবো। এছাড়া ৬টি আঁড়ি বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে সমুদ্র হতে ১১০ একর ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা আছে।