ঈদ পোশাকে আলোচনায় ‘পদ্মাবতী’

আলোচিত বলিউডি চলচ্চিত্র ‘পদ্মাবতে’ নায়িকার একটি পোশাকের আদলে তৈরি পোশাক এসেছে ঈদবাজারে ‘পদ্মাবতী’ নামে, যা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে তরুণীদের মধ্যে।   

কাজী নাফিয়া রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2018, 07:25 PM
Updated : 27 May 2018, 07:56 PM

বিক্রেতারা বলছেন, পদ্মাবত সিনেমায় নায়িকা দীপিকা পাডুকোন এই পোশাক পরেছিলেন।ঢাকায় খুব চলছে এটা।

অনেকটা লেহেঙ্গার ডিজাইনে তৈরি এই পোশাক চাহিদামতো সরবরাহ করতে পারছেন না বলেও একজন বিক্রেতা জানিয়েছেন।

পদ্মাবতী নামের এই পোশাক তরুণীদের নজর কেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা

যমুনা ফিউচার পার্কের ‘আনিকাস বিউটি অ্যান্ড এলিগেন্স’র ব্যবস্থাপক রাসেল রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রথম দিকেই এই পোশাকগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। আরও কিছু পদ্মাবতী অর্ডার দিয়েছি।”

পোশাকটির বিশেষত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আসলে এবারে পদ্মাবতীটা একটু নতুন ডিজাইনের আর সাইজটাও সবার পরার উপযোগী। তাই এটা চলছে।”

রাসেল জানান, এবার কুর্তি ও গাউনও কিনছেন অনেকে। থ্রি পিসও বেশ চলছে।

তার দোকানে ২৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা দামের জর্জেট, সুতি ও সিল্কের গাউন রয়েছে বলে জানান তিনি।  

বিভিন্ন ডিজাইনের স্টাইলিশ কুর্তি আর জরি, সুতা ও পাথরের কাজ করা গাউনের পাশাপাশি শেরোয়ানি স্টাইলের কামিজ, লাসা ও ফোর পার্ট ড্রেস উঠেছে ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটে।

বেশ কয়েকটি বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পোশাক খুঁজতে দোকানে দোকানে ঘুরছেন বিভিন্ন বয়সী মেয়েরা। অধিকাংশই চাচ্ছেন ব্যতিক্রমী কিছু, অনেকে আবার বলছেন কয়েকটি ডিজাইনের বাইরে এবারের পোশাকগুলো গতবারের ধাঁচের।

কেউ আবার গরম আর পোশাকের ডিজাইনকে গুরুত্ব দিতে কিনছেন ফ্যাশন হাউজগুলোর ‘এক্সক্লুসিভ কালেকশন’। লা রিভ, ইয়োলো, স্মার্টেক্স, সেইলর, ভগসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো থেকে মেয়েরা কিনছেন নানা ডিজাইনের কুর্তি, টিউনিক ও থ্রি পিস।

এসব কুর্তির কোনোটির হাতায় কুচি দেওয়া, আবার কোনোটির হাতা কনুইয়ের নিচ থেকে খোলা। কাজে আছে নতুনত্ব, কোনোটিতে লেইস দিয়ে ডিজাইন করা, আবার কোনটিতে হালকা এমব্রয়ডারির কাজ।

কিশোরীদের অনেককে লম্বা ফ্রক, সারারা, লাসারও খোঁজ করতে দেখা যায়।

ডিজিটাল প্রিন্টের ওপর শর্ট প্যাটার্নের ‘কামদানি’ পোশাকটি এবার বাজারে নতুন এসেছে বলে জানান যমুনা ফিউচার পার্কের ‘মেহবুবা ক্রিয়েটিভ ডিজাইন কমফরটেবল ক্লথিং’র ব্যবস্থাপক জুবায়ের হোসেন।

তিনি বলেন, “এবারের নতুন একটা ড্রেস হচ্ছে কামদানি। ডিজিটাল প্রিন্টের ওপর একটু শর্ট প্যাটার্নের ড্রেস, আর সাথে বড় ঘেরের কুচিওয়ালা পায়জামা। কোনোটায় এমব্রয়ডারির কাজ করা আবার কোনোটায় লেইস বসানো।”

এই পোশাক বাজরে নতুন হলেও দাম বেশি হওয়ার কারণে অধিকাংশ ক্রেতা কুর্তি, গাউন আর থ্রি পিস বেশি কিনছেন বলে জানান জুবায়ের।

“আমাদের পার্মানেন্ট কাস্টমাররাই বেশি প্রোডাক্ট নেয়। ১০-১২ বছরের মেয়েরা শেরোয়ানি স্টাইলের লাসাগুলোও কিনছেন।”

তার দোকানে ১২০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের থ্রি পিস এবং চার হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় গাউন পাওয়া যাচ্ছে।

যমুনা ফিউচার পার্কের বিভিন্ন দোকানে নেট, টিস্যু, জর্জেট, সুতির উপরে পাথর, সুতা ও জরির কাজ করা গাউন, ফ্লোর টাচ, স্টাইলিশ কুর্তি ও থ্রি পিসের চাহিদা বেশ দেখা যায়।

বনানী বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থী মৃত্তিকা রোববার তার মায়ের সাথে ঈদের পোশাক কিনতে এসেছিলেন এই মার্কেটে। বিভিন্ন দোকান ঘুরলেও নিজের পছন্দের পোশাক পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

“গাউন কিনব বলে ঘুরছি। কিন্তু ডিজাইনগুলো পছন্দ হচ্ছে না। পছন্দ হলে কিনে ফেলব।”

পোশাকের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।

শনিরআখড়া থেকে কেনাকাটা করতে আসা সায়েম হোসেন বলেন, “এবার দামটা বেশি মনে হচ্ছে। দুই চারশ টাকা বাড়লে সেটা সহনীয় হত, কিন্তু যা দাম চাচ্ছে, তাতে মনে হয় না এখান থেকে কাপড় কিনতে পারব।”

বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ফ্যাশন হাউজ সেইলরের বিক্রয়কর্মী মৌমিতা জানান, চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার ‘এক্সক্লুসিভ কালেকশনগুলো’ তাদের বেশি চলছে।

এসব ড্রেসের জামার সামনের অংশ কাপ্তানের মতো, কিছুটা ছোট আর পেছনের অংশটি বড়।

বসুন্ধরার একটি দোকান থেকে কুর্তি কিনেছেন নাবিলা হোসেন।

তিনি বলেন, “এগুলোর ডিজাইনটা আনকমন লাগল, তাই কিনলাম। আসলে ড্রেসে একটু নতুনত্ব না থাকলে কিনতে ইচ্ছা করে না।”

মিরপুর ২ নম্বরের ফ্যাশন হাউজ ভগ’র বিক্রেতা হীরা জানান, তারা বিভিন্ন ডিজাইনের কুর্তি, থ্রি পিস বিক্রি করছেন। তিন হাজার থেকে শুরু করে আট হাজার টাকার মধ্যের ড্রেসগুলোই বেশি চলছে।