সাপ্তাহিক ছুটিতে জমজমাট নগরীর ঈদ বাজার

রোজার অষ্টম দিনেই ঈদ কেনাকাটায় আসা ক্রেতাদের সমাগমে জমে উঠেছে রাজধানীর বিপণি বিতানগুলো।

কাজী নাফিয়া রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2018, 05:32 PM
Updated : 25 May 2018, 05:37 PM

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনি চক, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স এবং মিরপুরের বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে।

বেলা ১২টার পর থেকে নিউ মার্কেট, চাঁদনি চক ও গাউছিয়ার থান কাপড়, ওড়না, জুতা, ব্যাগ ও জুয়েলারির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। তবে মার্কেটের ভিতরের দোকানগুলোর তুলনায় সামনের খোলা জায়গা ও রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা ছিল বেশি।

নিউ মার্কেটে মেয়েদের ওয়ান পিস, কুর্তি, পালাজ্জো, লেগিংস বিক্রি করেন আলতাফ মামুন। ঈদের বাজার নিয়ে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোজার পর থেকে বিক্রি তেমন একটা হয় নাই। আজকে কাস্টমার পাইতাছি ভালো। বিক্রিও হইতাছে। গত শুক্রবারের চায়া আজকা বিক্রি অনেক বেশি হইছে।”

গাউছিয়ায় কেনাকাটা করতে আসা তাহরীমা জাহান জানান, ছুটির দিন বলে কেনাকাটা করতে এসেছেন।

“অন্যান্য দিন একে তো কাজ থাকে, তার ওপরে রাস্তায় জ্যাম, এজন্য মার্কেটে আসতে পারিনি। পরে ভিড় বেড়ে যাবে আরও, তাই এখনই কেনাকাটা করতে চলে এসেছি।”

সামনে ঈদ, তাই রাজধানীর মার্কেটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের আনাগোনা। ছবিটি শুক্রবার বসুন্ধরা সিটি মার্কেট থেকে তোলা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

রাজধানীর পান্থপথে বহুতল 
শপিং কমপ্লেক্স বসুন্ধরা
 সিটি শপিং মল এবং মিরপুরের বিপণি বিতানগুলোতে ছেলেদের পোশাকের তুলনায় শিশু ও মেয়েদের পোশাকের ক্রেতা বেশি দেখা যায়।

বসুন্ধরা সিটি থেকে গাউন কিনেছেন স্কুলছাত্রী জাফরিন।

তিনি বলেন, “অনেক ড্রেস দেখলাম। কিন্তু তেমন পছন্দ হয়নি। টিস্যুর ওপর কাজ করা গাউনগুলো পছন্দ হয়েছে। তাই কিনে ফেললাম।”

‘একটু আনকমন আর মেয়ের পছন্দ হওয়ায়’ পোশাক কিনে দিলেও এখানে দাম বেশি নেয়া হচ্ছে অভিযোগ তানিশার বাবা ইসরাফিলের।

তিনি বলেন, “একটা গাউন সাড়ে সাত হাজার টাকা নিল। দামটা আমার কাছে বেশি মনে হয়েছে।”

ঈদ উপলক্ষে পছন্দের পোশাক দেখছেন ক্রেতারা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

এই শপিং মলে রাইসা ফ্যাশনের বিক্রেতা শাব্বির জানান, তারা ভারতীয়, থাইল্যান্ড ও চীন থেকে আমদানি করা বিভিন্ন ফ্রক, গাউন, থ্রি পিস বিক্রি করছেন। আর এগুলো পাওয়া যাবে আড়াই হাজার থেকে সাত হাজার টাকায়।

তিনি বলেন, “আজকে বিক্রিটা এই কয়দিনের চেয়ে বেশি কিন্তু ভিড় যতটা হয়েছে সেই তুলনায় কিন্তু বিক্রি হয় নাই। কাস্টমাররা ম্যাক্সিমামই দেখে চলে যাচ্ছে। আর দাম কম বলায় বিক্রিও করতে পারছি না। আমাদের লস করে তো আর বিক্রি করব না।”

লামিসা কালেকশনে বিক্রি হচ্ছে ইন্ডিয়ান গাউন, সারারা, ঘাড়ারা, থ্রি পিস ও ওয়ান পিস। দোকানের মালিক ইয়াসিন আরাফাত বাবুল বলেন, “এই কয়টা দিন তো প্রতিদিন পাঁচ-দশ পিস থ্রি পিস বিক্রি করতে পেরেছি। বিক্রি ছিল অনেক কম। সেই অনুযায়ী সকালে বিক্রিটা ভালো হয়েছে। বিকাল থেকে ক্রেতা কমে গেছে।”

দুপুরে বৃষ্টির কারণে অনেকে চাইলেও মার্কেটে আসতে পারেননি বলে মনে করছেন তিনি।

এই আবহাওয়ায় ঈদের বাজারে বেচাকেনার হালচাল নিয়ে বাবুল বলেন, “বৃষ্টির সময় যারা মার্কেটের ভিতরে থাকে, তারা তো কিনতে থাকে। কিন্তু যারা পথে বৃষ্টি পায়, অনেক সময় মার্কেটে না এসে চলে যায়।

“ইফতারের আগ পর্যন্তই ক্রেতা সমাগম থাকে, সন্ধ্যার পরে তা কমতে থাকে।”

এদিকে দুপুরের পর থেকে মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের কাপড়ের শো রুম ও বিপণি বিতানগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে দেখা যায়।

ফ্যাশন হাউজ নায়রীর বিক্রেতা মিঠুন বলেন, “আজকে কেনাকাটাটা বেশি হচ্ছে। ছুটির দিন তো তাই। এতোদিন তেমন ক্রেতা পাইনি। আজকে অনেকে আসছেন এবং কিনছেন।”

বিকালে বৃষ্টি সময় মিরপুর ২ নম্বরের শো রুমে কেনাকাটা করতে আসা লামিয়া বলেন, “রেডিমেড থ্রি পিস কিনতে শো রুমে এসেছি। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল, তাই আটকা পড়ে গেলাম। নইলে এতোক্ষণে কয়েকটা দোকান ঘুরে ফেলতে পারতাম।”