ব্যাংকগুলোতে ‘নীতিবান নেতৃত্বের অভাব’

নীতিবান বা সৎ নেতৃত্বের অভাবই বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার প্রধান কারণ বলে চিহ্নিত এক গবেষণায় চিহ্নিত হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2018, 11:42 AM
Updated : 24 May 2018, 11:42 AM

‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অব ব্যাংক’ শীর্ষক এই গবেষণাটি চালিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে এক কর্মশালায় গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

গবেষণার জন্য চালানো এক জরিপের তথ্য তুলে ধরেন তিনি বলেন, “৬১ শতাংশ ব্যাংকার মনে করেন, ব্যাংকিং খাতে নীতিবান নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। এজন্য অনিয়ম এবং দুর্নীতির ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।”

গবেষণায় দেখা গেছে, নৈতিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য ব্যাংকের মানব সম্পদ উন্নয়ন খাতে প্রশিক্ষণ, কর্মশালাসহ সংশ্লিষ্ট নানা ধরনের উদ্যোগের জন্য প্রতিবছর অর্থায়ন বাড়ানোর পরিবর্তে উল্টো কমিয়ে দিচ্ছে ব্যাংকগুলো।

গবেষণায় উঠে এসেছে, ব্যাংকের পরিচালনা ব্যয়ের প্রতি ১০০ টাকার মধ্যে মানব সম্পদ উন্নয়নে মাত্র ২৫ পয়সা খরচ করা হয়।

ব্যাংক খাতে এক বছরে কর্মী কমেছে প্রায় ১০ হাজার। ২০১৬ সালে দেশে ব্যাংকে কর্মী ছিল ৯০ হাজার ২৬৫ জন। ২০১৭ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮১ হাজার ২৪৫ জন।

ড. তাজুল বলেন, “২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ব্যাংকগুলো কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং উন্নয়নে ব্যয় ৫০ শতাংশ কমিয়েছে। এক-তৃতীয়াংশ ব্যাংক তাদের মানব সম্পদ উন্নয়নের যে বরাদ্দ তাও ব্যয় করতে ব্যর্থ হয়েছে।”

কর্মশালায় বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ব্যাংকিং খাতের নৈতিকতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নৈতিকতা বজায় রাখতে পারলে ব্যাংকিং খাতের সমস্যা অনেকাংশে দূর হবে।

তিনি ব্যাংকের কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর উপরও জোর দেন।

বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী বলেন, “ব্যাংকিং খাতে চাকরির জন্য লাইসেন্স ব্যবস্থার প্রবর্তন করলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে।”

বিআইবিএমের সুপারনিউমারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী বলেন, “নারী কর্মীদের সন্ধ্যা ৬টার পর ব্যাংকের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

“আবার ব্যাংকের পরিচালকদের একটি অংশ ব্যাংক কর্মীদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হবে, তা জানে না। এজন্য ব্যাংক পরিচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।”

কর্মশালায় ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বলেন, ব্যাংকিং খাতের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয় বেশ কিছু সার্কুলার জারি করেছে। এসব সার্কুলার যথাযথ পরিপালনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নজরদারি করা হয়।

বিআইবিএম মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন।