বড়পুকুরিয়ার অচলাবস্থা কাটেনি

নিয়োগ স্থায়ী করা, বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধসহ ১৩ দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে যাওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের আলোচনা না হওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2018, 11:17 AM
Updated : 24 May 2018, 11:17 AM

বৃহস্পতিবার খনি শ্রমিকদের এই কর্মবিরতি গড়িয়েছে দ্বাদশ দিনে। এর মধ্যে আট দিন খনি থেকে কয়লা তোলার কাজ ছিল পুরোপুরি বন্ধ। সোমবার থেকে চীনা শ্রমিক দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আংশিক উত্তোলন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।

এর জবাবে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন যে কোনো সময় খনি অবরোধের হুঁমকি দিয়েছে।

খনির এক হাজার ৪১ জন বাংলাদেশি শ্রমিক গত রোববার থেকে এ আন্দোলন শুরু করে; কর্মবিরতির তৃতীয় দিনে শ্রমিকদের সঙ্গে খনির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংঘর্ষও ঘটে।

গত কয়েক দিনের মত বৃহস্পতিবারও শ্রমিক-কর্মচারীরা খনির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শ্রমিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিলেই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হবে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, “১৩ দফা দাবিসহ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে খনি কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত শ্রমিকেরা কাজে যাবে না। প্রয়োজনে খনি অবরোধ করা হবে।”

সব শ্রমিককে নিয়োগপত্র দেওয়া, প্রতি বছর ৪০ শতাংশ দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ, সকল শ্রমিককে গ্র্যাচুইটি দেওয়া, খনির ভেতরে যারা কাজ করেন, তাদের কর্মঘণ্টা সর্বোচ্চ ছয় ঘণ্টায় বেঁধে দেওয়, খনির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ২০টি গ্রামের বাড়ি-ঘরের বিষয়ে দ্রুত স্থায়ী সমাধান এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রত্যেক পরিবার থেকে খনিতে চাকরি দেওয়ার দাবি রয়েছে তাদের ১৩ দফার মধ্যে।

শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতিতে আট দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার সকাল থেকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে চীনা শ্রমিক দিয়ে উত্তোলন শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম’।

হাবিব বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চীনা শ্রমিক দিয়ে কয়লা উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এক শিফটে গড়ে ১২ থেকে ১৩শ মেট্রিক টন কয়লা তুলছে। দিনে তিন শিফটে খনির স্বাভাবিক উৎপাদন ছিল প্রায় চার হাজার টন। 

সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়াম ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করে।

সে সময় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, এই খনিতে ৩৯০ মিলিয়ন মেট্রিক টন বিটুমিনাস কয়লার মজুদ রয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ খনি থেকে প্রায় ১০ লাখ ৩০ হাজার টন কয়লা উত্তোলন করা হয়।