খিলগাঁওয়ে ইফতারে সাড়া ফেলেছে ক্যাটারিং সার্ভিস

ঢাকার খিলগাঁওয়ের তালতলা থেকে শহীদ বাকী রোডের দিকে যেতে রাস্তার দুইপাশে মুখরোচক নানা পদের ইফতার নিয়ে বসছে এলাকার রেস্তোরাঁ ও ক্যাটারিং সার্ভিসগুলো।

সাজিয়া আফরিনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2018, 05:00 PM
Updated : 23 May 2018, 05:00 PM

গত কয়েক বছর ধরে রেস্তোরাঁর পাশাপাশি কয়েকটি ভবনের বেইজমেন্ট আর নিজস্ব দোকানে বাহারি ইফতার পদ নিয়ে বসছে ক্যাটারিং সার্ভিসগুলো। পুরান ঢাকার মুখরোচক ইফতারের স্বাদ নিতে এসব ক্যাটারিং সার্ভিসের ইফতার কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন খিলগাঁওয়ের বাসিন্দারা।

বিরিয়ানি, রোস্ট, পরোটা, গরু-খাসি ভুনার মতো লোভনীয় ইফতার পদ কিনতে আলমগীর ক্যাটারিং সার্ভিসে আসা ব্যাংকার মেহের নিগার বলেন, “এই ক্যাটারিংয়ের ইফতার পছন্দ করার কারণ তাদের খাবার টাটকা।”

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ”গত সাত-আট বছর ধরে প্রতি রোজার মাসে কমপক্ষে পাঁচ-ছয় বার এখান থেকে ইফতার নেই। ওদের রান্নায় পুরান ঢাকার ফ্লেভার আছে, আর দিনেরটা দিনেই রান্না করে।”

এবার ইফতারে ৩০টি পদ রেখেছে আলমগীর ক্যাটারিং সার্ভিস। তাদের ইফতারি আয়োজনে প্রতি কেজি গরু ভুনা, গরুর চাপ, আর গরুর ভুড়ি মিলবে ৮০০ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি খাসি ভুনা এক হাজার টাকা, আস্ত মুরগির রোস্ট সাড়ে ৪০০ টাকা, প্রতি পিস চিকেন ফ্রাই-রোস্ট ১২০ টাকা, কাচ্চি বিরিয়ানি সাড়ে ৪০০ টাকা আর এক লিটার বোরহানি ১২০ টাকা। হরেক রকম কাবাব পাওয়া যাবে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়।

ভোজনরসিকদের জন্য জর্দা, হালিম, সাসলিক, জিলাপি, দই বড়া, চপ, কিমা পরোটা, লুচি, টানা পরোটাও মিলবে তাদের দোকানে।

এই দোকানের কর্মচারী রানা মিয়াঁ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কাস্টমার গতবারের চেয়ে কম। তবে আস্তে আস্তে আরও বাড়বে। রোজার শেষ দিকে ইফতার বিকালের মধ্যেই শেষ হইয়া যায়।”

ওই সড়কেই ইস্টার্ন ব্যাংক ভবনের বেইজমেন্টে ইফতার নিয়ে বসেছে আক্কাছ ক্যাটারিং সার্ভিস।

আলমগীর ক্যাটারিং সার্ভিসের মতো প্রায় একই দামে এখান থেকে ক্রেতারা কিনতে পারবেন চিকেন সাসলিক, উইংস ফ্রাই, চিকেন গ্রিল ও বোম্বাই জিলাপি।

খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ার ব্যবসায়ী আবদুল হামিদও ইফতারে স্বাদের ভিন্নতা আনতে ক্যাটারিং সার্ভিস থেকেই ইফতার কেনেন। 

তিনি বলেন, “স্পেশাল ইফতার কিনতে হলে এখানেই আসি। আইটেম থাকে অনেক, আর পরোটাগুলো সামনেই ভেজে দেয়।”

এই ক্যাটারিং সার্ভিসের ম্যানেজার নূর আলী জানান, তারা সব দিক বিবেচনা করেই ইফতার তৈরি করেন বলে ইফতার নষ্ট হয় না।

“আমরা বৃষ্টি, যানজট, কী বার সব দেখে ইফতার বানাই পরিমাণমতো। বাসি হওয়ার চান্স নাই।”

আক্কাছ ক্যাটারিংয়ে ইফতারের অর্ডার দিতে দিতে খিলগাঁও সি ব্লকের বাসিন্দা হোসেন ইমাম বলেন, “বাসায় ইফতার পার্টি কাল। আজ অর্ডার দিয়ে যাচ্ছি কাল ওরা বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসবে।"

এ বছরই প্রথম দোকানের বেইজমেন্টে ইফতার আয়োজন বসিয়েছে ‘চিটাগাং বুল’।

স্বাস্থ্যসম্মত ইফতারের জন্য তাদের ইফতার কিনতে ক্রেতারা আসছেন বলে দাবি করলেন দোকানের কর্মী মনির হোসেন। সাধারণ ইফতারের পাশাপাশি নানা পদের কাবাবও মিলছে তাদের দোকানে।

সাভার পোড়াবাড়ী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার তাদের নিজেদের বানানো দইয়ের লাচ্ছি, লাবাং, বোরহানি আর মাঠা নিয়ে বসেছে দোকানের সামনেই।

এলাকায় ক্রেতাদের মধ্যে তাদের লাবাং-বোরহানির চাহিদা ব্যাপক জানিয়ে দোকানের ম্যানেজার মো. মইনুল হোসেন বলেন, “লিটার প্রতি বোরহানি মিলছে ১২০ টাকায়, লাবাং ১৬০ টাকা, মাঠা ১২০ এবং লাচ্ছি ২০০ টাকায়।”

এছাড়াও পিঠা ঘর, পালকি, আপন কফিশপসহ সব রেস্তোরাঁর সামনেই দেখা যায় জমজমাট ইফতার বেচাকেনা।