গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি কিছুটা কম বলে জানান তারা। এজন্য মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলায় রাস্তায় যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতাকে দায়ী করছেন তারা।
শনিবার মিরপুরের বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ঘুরে দেখা গেছে, বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে বিক্রেতারা ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও ৫টার পর থেকে বিক্রি বাড়তে থাকে।
এখানকার ইফতার সামগ্রীর মধ্যে আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি, ডিমচপ, ছোলা, মুড়ি, ঘুগনির সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কাবাব, চিকেন পরোটা, গ্রিল, হালিম ও মিষ্টি।
এছাড়া ইরানি জিলাপি, বোম্বে তিলের জিলাপি, স্পেশাল মাঠা, লাচ্ছি ও দই বিক্রি হচ্ছিল সেখানে।
অন্যান্য রেস্তোরাঁগুলোর তুলনায় এ রেস্তোরাঁয় ভিড় কিছুটা বেশি হলেও ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিক্রি বেশি হলেও মেট্রোরেলের কাজ চলায় গত বছরের তুলনায় তা কিছুটা কম।
“অনেক ক্রেতা আসছে। তবে রাস্তা পারাপারে সমস্যার কারণে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, বিক্রিটা গতবারের চেয়ে কিছুটা কম। দুইটা রোজা তো গেল, আশা করছি বিক্রি আরও বাড়বে।”
সাইফুল জানান, তারা তান্দুরী চিকেন (প্রতি পিস) বিক্রি করছেন ১৫০ টাকায়, চিকেন এগ রোল ১১০ টাকা, হালিম (গরু) ৩৫০ টাকা, জালি কাবাব ৩০ টাকা, বার-বি-কিউ ৬০ টাকা, ফ্রাইড অনথন ২০ টাকা, ডিম চপ ২৫ টাকা, ভেজিটেবল পাকুরা ২০ টাকা, ইরানি জিলাপি (প্রতি কেজি) ২৬০ টাকায়।
মিরপুরের রব্বানী হোটেলে ইফতারের নিয়মিত আইটেমের পাশাপাশি মিলছে শাকের চপ, শামী কাবাব, জালি কাবাব, গ্রিল, বোরহানি, জিলাপি ও হালিম।
বিক্রি কম হওয়ায় কিছুটা হতাশায় এ হোটেলের ব্যবস্থাপক বোরহান উদ্দিন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কাল সারা দিনে বিক্রি হইছে সাড়ে চার হাজার টাকার। আর রোজার কারণে তো নরমাল বিক্রিও নাই। আজ সারা দিনে ১৫০০ টাকার বিক্রি হইছে। ইফতারের আগে আগে বিক্রি কিছুটা বাড়বে।”
মেট্রোরেল নির্মাণের কাজে রাস্তার মাঝের অংশ বন্ধ করে দেওয়ায় মানুষের চলাচলের অসুবিধাকেই বিক্রি কমার কারণ বলে মনে করছেন বোরহান।
এই রেস্তোরাঁয় ইফতার কিনতে আসা মাসুদ রহমান বলেন, “দাম তেমন বাড়েনি এবার। তবে মানটা আগের তুলনায় কমেছে। বাসায় তো আসলে এসব বানানোর সুযোগটাও কম, তাই কিনে খাওয়া ছাড়া উপায় নাই।”
মিরপুরের বনফুল অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপক আবু তাহের জানান, শাহী জিলাপি, রেশমী জিলাপি, ফিস কাবাব, জালি ও শামী কাবাব, চিকেন অনথনসহ আলুর চপ, পেঁয়াজু, বেগুনি বিক্রি করছেন তারা।
এদিকে মিরপুরের বিহারী ক্যাম্পের হোটেলগুলোতে কম দামে মিলছে ইফতার সামগ্রী। এখানে আলুর চপ, পেঁয়াজু ও বেগুনি তিন টাকায়, ডিম চপ ৫ টাকায়, জিলাপি ৮০-১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা যায়।
বিহারি ক্যাম্পে ইফতার কিনতে আসা ইলিয়াস বলেন, “বেশি দাম দিয়ে কেনার মতো সাধ্য তো আমাদের নাই। তাই এখান থেকেই ইফতার নেই। বাসায় বানাতে গেলে তো খরচও বেশি।”
তিনি বলেন, “এমনিতেই মিরপুরে গ্যাসের সমস্যা। রোজায় সমস্যাটা আরও তীব্র হয়েছে। মাগরিবের আজানের পর গ্যাস আসে। তাই বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনে খেতে হচ্ছে। খরচ বেশি হচ্ছে। কিন্তু কিছু তো করার নাই।”
মিরপুর ১০ নম্বরের বিএফসিতে ইফতারের জন্য ২৫০ টাকায় দুটি মেন্যু রয়েছে।
একটিতে রয়েছে খেঁজুর, ভেজিটেবল রাইস, হট উইংস (চার পিস), বাঁধাকপির সালাদ, ড্রিংকস ও পানি; অন্যটিতে রয়েছে খেঁজুর, ভেজিটেবল রাইস, বারবিকিউ বোনলেস স্ট্রিপস (১০ পিস), বাঁধাকপির সালাদ, পানি ও জুস।
মিরপুর ৭ নম্বরের কফি এক্সপ্রেসেও ইফতার উপলক্ষে ২৬০ টাকা ও ২৩০ টাকায় রয়েছে দুটি প্লাটার।