তরল দুধ বিপণন কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসে সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে সরকারি সংস্থাটি।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইসিডিডিআর,বির গবেষণার ফলাফল তারা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গবেষণায়ও পাস্তুরিত দুধে কিছু সমস্যা ধরা পড়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামী ২৭ মে দুগ্ধ বিপণনকারী কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধি, পশু সম্পদ অধিদপ্তর ও গবেষক দলের সদস্যদের নিয়ে বসব। সমস্যার দ্রুত সমাধানে সেখানে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হবে।”
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) একটি গবেষণায় বাংলাদেশে পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
গবেষণার বরাত দিয়ে বুধবার প্রতিষ্ঠানটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুগ্ধ খামার থেকে শুরু করে বিক্রির দোকান পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে দুধে ব্যাকটেরিয়া দূষণ হয়, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়। এই দুধ উচ্চ তাপে না ফুটিয়ে খেলে তা বিপজ্জনক হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা।
গবেষণায় ৭২ শতাংশ দুধে কলিফর্ম এবং ৫৭ শতাংশ নমুনায় ফিক্যাল কোলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। নমুনাগুলোর ১১ শতাংশ উচ্চসংখ্যায় ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়া দূষিত।
“ফিক্যাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ এবং দুধে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির ফলে বোঝা যায় যে, দুধ জীবাণু বা রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারা দূষিত, যা উষ্ণ রক্তের প্রাণীর মলে থাকতে পারে।”
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলছেন, পরিবেশগত অনেক কারণে দুধ দূষিত হয়ে থাকে।
“অনেক সময় কৃষক পর্যায়েও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে দুধে ব্যাকটেরিয়া যুক্ত হয়। দুধ দোয়ানোর সময় গোবর বা গরুর মলমূত্র থেকে দুধ দূষিত হয়। তাপামাত্রাজনিত কারণেও ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। এই দিকগুলো ঠিক করে সমস্যার সমাধান করা যায় কি না আমরা দেখব।”
বৈঠকে এ বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে কোম্পানিগুলোকে সময় বেঁধে দিতে চায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
“এর পরেও কোনো দুধে দূষণজনিত ঝুঁকি থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে পণ্যগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হবে,” বলেন মাহফুজুল হক।