গ্রামীণফোন অ্যাক্সিলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের যাত্রা শুরু

গ্রামীণফোন অ্যাক্সিলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের যাত্রা শুরু হলে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2018, 03:11 PM
Updated : 6 May 2018, 03:11 PM

রোববার জিপি হাউজে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রামীণফোন অ্যাক্সিলেরেটর (জিপিএ)-এর পঞ্চম ব্যাচকে চার মাসব্যাপী কর্মসূচিতে স্বাগত জানানো হয়েছে।

২০১৫ সালে চালু এই কর্মসূচির মাধ্যমে আরো ২১টি স্টার্টআপকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, “বাংলাদেশে অনেক তরুণ প্রতিভা আছে যাদের সাফল্য লাভের জন্য সামান্য সহযোগিতা দরকার।জিপি একসেলেরেটর হচ্ছে সেই সহযোগিতা।”

পঞ্চম ব্যাচের জন্য জিপি একসেলেরেটর দুই সপ্তাহে এক হাজারের বেশি আবেদন পেয়েছিল। কঠিন বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে দুইদিনের বুট ক্যাম্পে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং এদের মধ্যে থেকে ১৫টি স্টার্টআপকে নির্বাচন করা হয় আরো আরো যাচাই, মুখোমুখি সাক্ষাৎকার এবং প্রেজেন্টেশনের জন্য।

তীব্র প্রতিযোগিতার পর ৫টি স্টার্টআপকে জিপি একসেলেরেটর পঞ্চম ব্যাচের জন্য নির্বাচন করা হয়।

গ্রামীণফোনের চিফ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ট্র্যান্সফরমেশন অফিসার কাজী মাহবুব হাসান বলেন, “এই নতুন ব্যাচ এখন পর্যন্ত দেখা ব্যাচগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সেরা এবং আমি অপেক্ষায় আছি এটা দেখতে যে তারা এই প্রোগ্রাম শেষ করার পর কতটা সাফল্য অর্জন করে।"

জিপি একসেলেরেটর একটি উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্ম যেখানে, প্রতিটি ব্যাচের স্টার্টআপদের চার মাস আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বিশেষজ্ঞ দ্বারা কারিকুলামভিত্তিক মেন্টশিপ দেওয়া হয়।

নির্বাচিত প্রতিটি স্টার্টআপকে ৮% ইকুইটির বিপরীতে ১৫ হাজার ডলার সিড ফান্ড হিসেবে দেওয়া হয়। এছাড়াও তারা ১১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার মূল্যের অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস (এডব্লিউএস) ক্রেডিট এবং চার মাস জিপি হাউজে কাজ করার জন্য জায়গা দেওয়া হয়।

চার মাসের এ্ই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় ও বিদেশি মেন্টর, খাত বিশেষজ্ঞ এবং পেশাজীবীদের কাছ থেকে টার্ম শিট, মূল্যায়ন, আর্থিক মডেলিং ও ব্র্যান্ডিং এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শিখতে পারে।

একই সাথে এই প্ল্যাটফর্ম সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের পরিচয় করিয়ে দিতে পারে। প্রতিটি কোম্পানিকে যে সহায়তা দেওয়া হয় তার বাজামূল্য প্রায় ৬৫ লাখ টাকা।

গ্রামীণফোন জানায়, বিভিন্ন ব্যবসায়িক খাত থেকে আসা জিপি একসেলেরেটর এর আগের ব্যাচের কোম্পানিগুলো এখন বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। মাত্র ছয় মাসে গড়ে তাদের কোম্পানির মূল্য চার গুণ বৃদ্ধি করেছে। ১২টি চালু কোম্পানির মধ্যে দুটির মূল্যমান ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। 

জিপি অ্যাক্সিলেরেটরের প্রধান মিনহাজ আনোয়ার বলেন, “মাত্র দুই বছরেই জিপি একসেলেরেটর বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে একটি মানদণ্ড হয় উঠেছে।”

এবার জিপি একসেলেরেটরে অনলাইন শিক্ষা, মাইক্রো জব প্ল্যাটফর্ম, ভিএএএস অটোমেশন, পার্কিং সুবিধা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিচ্ছে।

জিপি একসেলেরেটরের পঞ্চম ব্যাচের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলো হল-

সার্চ ইংলিশ- একটি ইরেজি ভাষা শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম, যা ১০ লাখ সদস্যকে ফেইসবুক, ওয়েবসাইট এবং ওয়েবিনারের মাধ্যমে তাদের ইংরেজি ভীতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করছে।

সিওয়ার্ক মাইক্রোজব লিমিটেড- এটি একটি ক্রাউড সোর্সড মাইক্রো জব প্ল্যাটফর্ম, এখানে নিয়োগকারী, কন্ট্রিবিউটরদের জন্য কাজ দিয়ে থাকে। বর্তমানে সিওয়ার্ক গুগুল প্লেতে বাংলাদেশে সপ্তম স্থানে আছে এবং এর মাসিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫০০০।

অনুসার্ভার- এটি একটি অ্যাপ-ক্লাউড হাইব্রিড যা অ্যানড্রয়েড মোবাইলফোনকে ক্ষুদ্র সার্ভারে পরিণত করে বিভিন্ন এসএমএস ও কলভিত্তিক সেবা দিতে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সামান্য খরচে তাদের গ্রাহকসেবা ও বিপণন সেবা প্রদান করতে দেয়।

ডিজিটাল মানুষ- এটি একটি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য লিড জেনারেটর ও মানুষকে সেবা প্রদানকারীর সাথে যুক্ত করে। বর্তমানে তারা বাংলাদেশের বৃহত্তম লিড জেনারেশন সেবাদাতা। তারা দেশের ৫টি শহরের ১৭০টি এলাকায় এবং ভারতের একটি শহরে কাজ করছে।

পার্কিংকই- এটি গাড়ী চালকদের অব্যবহৃত পার্কিং খুজে পেতে সাহায্য করে এবং এর মাধ্যমে বাড়ীর মালিকরা তাদের অব্যবহৃত পার্কিং ভাড়া দিয়ে অর্থ আয় করতে পারে।