শনিবার রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পঞ্চম বার্ষিকীতে বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন তৈরি পোশাক খাতে নিরাপত্তার রোলমডেল।
“বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত সেফটির রোল মডেল হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন লোকের কাছে প্রশংসা শুনেছি। রানা প্লাজা একটা ফল ছিল। এর পরে আমরা যে কাজগুলো করেছি সেটা আন্তরিকভাবে করেছি। আজ আমি বুক ফুলিয়ে বলতে পারি বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাত সেইফ এবং ট্রান্সপারেন্ট।”
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহত শ্রমিকের সংখ্যা জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি জানান, রানা প্লাজার এক হাজার ১৩৮ জন, তাজরিনে ১১১ জন, কেটিএসে ৭ জন, স্প্রেকট্রামে ৫৬ জন, হামিমে তিন-চার জন। এছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির।
শ্রমিকদের কল্যাণে বিজিএমইএ অনেক ভালো উদ্যোগ নেওয়ার পরও ‘একটি বিশেষ মহল’ অযৌক্তিক সমালোচনা করছে বলে অভিযোগ করেন সিদ্দিকুর রহমান।
বিশ্বের বিভিন্ন শিল্প দুর্ঘটনায় নিহতদের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি।
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ হাজার ১৩ জন, চীনে পাঁচ হাজার ১১৮ জন, জাপানে তিন হাজার ৭৮২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৪২ সালের ২৬ এপ্রিল চীনের বেনঝু কয়লাখনি দুর্ঘটনায় এক হাজার ৫৪৯ এবং ১৯৪৭ সালের ১৬ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে এক শিল্প দুর্ঘটনায় ৫৮১ জন নিহত হওয়ার তথ্য দেন তিনি।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই শিল্প দুর্ঘটনা ঘটে।
“দুর্ঘটনা শুধু আমাদের দেশেই ঘটে না, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ঘটে থাকে। পৃথিবীতে এত দুর্ঘটনা ঘটছে অথচ রানা প্লাজার দুর্ঘটনার বর্ষপূর্তি হলেই এটা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রানা প্লাজার পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানার বেতন, পাওনা, আহতদের চিকিৎসা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে বিজিএমইএ ১৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাসস্ট্যন্ড সংলগ্ন আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়লে শিল্পক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩৫ জন, আহত হন আরও হাজারখানেক শ্রমিক যারা ওই ভবনের পাঁচটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।