৯০% ব্যাংকের আইটি বিভাগ অগোছালো: গবেষণা

বাংলাদেশে বেশির ভাগ ব্যাংকের আইটি বিভাগ এখনও অগোছালো বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 April 2018, 04:41 PM
Updated : 10 April 2018, 07:45 PM

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯০ শতাংশ ব্যাংকে ‘আইটি গভর্নেন্স নেই’।
এর ফলে আইটি অবকাঠামো, নিরাপত্তাসহ অনেক বিষয়ে ব্যাংকগুলো পিছিয়ে পড়ছে বলে গবেষকরে ভাষ্য।

মঙ্গলবার ঢাকায় বিআইবিএম মিলনায়তনে ‘আইটি অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক এক কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের অনেক পরিবর্তন হলেও দেশের ৯০ শতাংশ ব্যাংকে পুরোপুরি আইটি গভর্নেন্স নেই।

বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক শিহাব উদ্দিন খান উপস্থাপিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ৬০ শতাংশ ব্যাংকে আইটি গভর্নেন্স বাস্তবায়নে কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে ২২ শতাংশ ব্যাংকে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি নীতিমালা অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন ব্যাংক খাতের বিশেষজ্ঞরা।

সাইবার অপরাধীদের লক্ষ্যস্থল এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো

কর্মশালায় সাবেক ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা ব্যাংকগুলোর আন্তঃসম্পর্ক বাড়ানোর উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, “যোগাযোগের অভাবে এক ব্যাংকের সমস্যা অন্যরা জানতে পারছে না। ফলে একই দুর্ঘটনা অন্য ব্যাংকেও ঘটছে। নিজেদের মধ্যে সমস্যাগুলো আলোচনা করলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে।”

আইটি নিরাপত্তায় অভিজ্ঞ জনশক্তি তৈরি এখন ‘অত্যন্ত জরুরি’ বলে মন্তব্য করেন দেশের প্রথম নারী ডেপুটি গভর্নর নাজনীন।

কর্মশালার প্রধান অতিথি ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, সারা বিশ্বেই সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বাংলাদেশের ব্যাংক খাত যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকটি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে যে আইসিটি নীতিমালা ব্যাংকগুলোকে দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নের তাগিদ দেন তিনি।

দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি ভালো মানের সফটওয়্যার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে রাজী হাসান বলেন, “বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে খরচের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় অনেক ঝামেলা রয়েছে।”

কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ.কে.এম. ফজলুল হক মিয়া, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাঈনুদ্দিন চৌধুরী, স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের কান্ট্রি টেকনোলজি অফিসার মনিতুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।