ইন্টারনেটভিত্তিক অর্থ লেনদেনের প্ল্যাটফর্ম ‘আইপে’র যাত্রা

অর্থ লেনদেন আরও স্বচ্ছ, সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করতে যাত্রা শুরু করেছে ইন্টারনেটভিত্তিক অর্থ আদান-প্রদান প্ল্যাটফর্ম আইপে সিস্টেমস লিমিটেড।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2018, 12:01 PM
Updated : 22 March 2018, 12:01 PM

নগদ অর্থের পরিবর্তে আইপের মোবাইল অ্যাপ অথবা ওয়েবসাইটে নিজস্ব ‘ই-ওয়ালেট’ খুলে পণ্য ও সেবা ক্রয়ের সুবিধা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্মটিকে ‘বাংলাদেশের পেপাল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

বুধবার রাতে হোটেল রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে আইপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি এই প্ল্যাটফর্মের ডেভেলপারদের ধন্যবাদ জানাই কারণ তারা বাংলাদেশে আমাদের নিজস্ব পেপাল তৈরি করেছে, আজকের দিনটি আমাদের জাতির জন্য অত্যন্ত গৌরবজনক ও অসাধারণ সৌভাগ্যের দিন।

“ক্যাশলেস সমাজ গড়ার পথকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে এ ইন্টারনেট পেমেন্ট সেবা আইপে। ক্যাশলেস সমাজ গড়া গেলে মানবাধিকার লঙ্ঘন, জঙ্গি অর্থায়নের মত অপরাধ অনেকাংশেই কমানো সম্ভব হবে।”

অনুষ্ঠানে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানি দূর করে ডিজিটাল লেনদেন প্রযুক্তিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে বাংলাদেশের পেপাল-আইপে।

আইপে প্রসঙ্গে এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকারিয়া স্বপন বলেন, স্মার্টফোন থেকে গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে আইপে অ্যাপ ডাউনলোড করে খুব সহজেই একটি ডিজিটাল ওয়ালেট খোলা যাবে। অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস সমর্থিত স্মার্টফোন ছাড়াও যেকোন ফিচার ফোন থেকেও ব্রাউজারের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় আইপে ওয়ালেট।এছাড়াও আইপের ওয়েবসাইট থেকে ই-ওয়ালেট এক্সেস করতে পারবেন গ্রাহকরা।

আইপে সিস্টেমস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহিদুল আহসান বলেন, আইপে আ্যাপসের মাধ্যমে নগদ টাকা ছাড়াই দৈনন্দিন কেনাকাটা ও অন্যান্য বিল পরিশোধ করা যাবে। পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহারকারীর ব্যাংক হিসাবও সহজেই সংযুক্ত করা যায় আইপে অ্যাপ অ্যাকাউন্টে। কেননা বাংলাদেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আইপে।”

যেভাবে নিবন্ধন করা যাবে

একটি ই-ওয়ালেট চালুর জন্য গ্রাহককে অ্যাপ ডাউনলোডের পর চার ধাপে নিবন্ধন করতে হয়। প্রথম ধাপে প্রোফাইল, নাম ও মোবাইল নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হবে। পরিচয়পত্রের কপি, ঠিকানা ও নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দিলেই অ্যাকাউন্টটি ভেরিফাই হবে।

গ্রাহককে ই-ওয়ালেটে ব্যালেন্স লোড করার জন্য অবশ্যই স্বীকৃত যে কোনো ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট অথবা ক্রেডিট/ডেবিড কার্ড থাকতে হবে। আবার ই-ওয়ালেট থেকে অর্থ ট্রান্সফার করার জন্যও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যবহার করতে হবে।

একজন গ্রাহক একদিনে সর্বাধিক ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারবেন এ ব্যবস্থার মাধ্যমে। আর এক মাসে তার মোট ব্যয়ের সীমা থাকবে দুই লাখ টাকা। ব্যক্তিগত ই-ওয়ালেটে একজন সর্বাধিক চার লাখ টাকা জমা রাখতে পারবেন। তবে বাণিজ্যিক ই-ওয়ালেটে অর্থ জমা রাখার কোন সীমা রাখা হয়নি।

জাকারিয়া স্বপন জানান, টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিল পরিশোধ, ট্যাক্স, ট্রান্সপোর্ট ও টিউশন ফি পরিশোধসহ সব ধরনের পণ্য ও সেবা ক্রয় করা যাবে আইপে দিয়ে।

ব্যক্তিগত অর্থ লেনদেনে এতে কোনো চার্জ কাটা হবে না বলে জানান স্বপন।

অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলামসহ বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।