বৈদেশিক বাণিজ্যে নদীপথও ব্যবহারের সুপারিশ

বৈদেশিক বাণিজ্যে পণ্য পরিবহনকে সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী করতে নদীপথ ব্যবহারে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2018, 01:22 PM
Updated : 21 Feb 2018, 11:03 AM

রাজধানীর একটি হোটেলে মঙ্গলবার নদীপথে পণ্য পরিবহন বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মসিউর বলেন, “শিপিং মিনিস্ট্রির উচিত নদীপথের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি অনুমোদন করা।”

বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্যে বহুমাত্রিক পরিবহন ব্যবস্থার জোর দিয়ে বলেন, মংলা বন্দরের সঙ্গে ভুটান ও নেপাল এবং চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্দরগুলোকে যুক্ত করা দরকার।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) আয়োজনে আলোচনা সভায় সড়কপথে ও চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ কমাতে নদীবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নদীপথে পণ্য পরিবহনের সুপারিশ করেন সংস্থাটির সভাপতি আবুল কাশেম খান।

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিকভাবে এক হর্সপাওয়ারের একটি ইঞ্জিনের মাধ্যমে সড়কপথে একটি ট্রাক ১৫০ কেজি ও রেলপথে ৫০০ কেজি পণ্য পরিবহন করা যায়, যেখানে নদীপথে চার হাজার কেজি পণ্য পরিবহন করা সম্ভব।”

পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার টার্মিনাল ব্যবহারের উপর জোর দিয়ে সেমিনারের বিশেষ অতিথি অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি নূর-ই-আলম চোধুরী বলেন, “পানগাঁও টার্মিনালে ফ্রেইট চার্জ মাত্র ১০০ ডলার।”

মাল খালাস প্রক্রিয়া দ্রুত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, একটি জাহাজ ‘আনলোড’ করতে ২০-৩০ দিন সময় লেগে যায়। দ্রুত পণ্য খালাস না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এছাড়াও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ‘সেভেন সিস্টার্সের’ সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের সংযোগ স্থাপনের উপর জোর দেন তিনি।

মাল খালাসে শুল্ক জটিলতার কথা উল্লেখ করে ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, “শুল্ক জটিলতার কারণে পণ্য ছাড়াতে ১৫-২০ দিন সময় লেগে যায়। ফলে জাহাজগুলো আটকে থাকে।”

ব্যয় ও উপযোগিতা অনুযায়ী বাংলাদেশের নদীবন্দরগুলোর ধারণক্ষমতা প্রতিযোগিতামূলক হওয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আলোচনা সভায় নদীপথে অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেন সেমিনারের প্রধান বক্তা ডিসিসিআইয়ের অবকাঠামো বিষয়ক জাতীয় স্থায়ী কমিটির আহ্বায়ক ইয়াসির রিজভী।

তিনি বলেন, ভারতের হলদিয়া বন্দর ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়া গেছে, যা ঢাকা থেকে সবচেয়ে কাছে। বাংলাদেশ ভারত ও নেপালকে আমাদের বন্দরগুলো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।

“আমরাও চাই ভারতের বন্দরগুলো ব্যবহার করতে।”

অবকাঠামোগত দিক থেকে পায়রা বন্দর আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হতে আরো সময় লাগবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দরের উপর বেশি চাপ থাকে মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়াও প্যানেল ডিসকাশনে অংশগ্রহণ করেন মায়ার্স্ক বাংলাদেশ লিমিটেডের কান্ট্রি অপারেশনস ম্যানেজার মোহাম্মাদ সারোয়ার আলম চৌধুরী, কুয়েহ্ন প্লাস নাগেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ পাটোওয়ারী, পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনালের ব্যবস্থাপক আহমেদুল করীম চৌধুরী এবং মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের কান্ট্রি হেড স্বপ্না ভৌমিক।