প্রাণের আচার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন সুনামগঞ্জের পান্না

প্রাণ আয়োজিত ২০১৭ সালের জাতীয় আচার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সুনামগঞ্জের শরীফা আক্তার পান্না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2018, 06:21 PM
Updated : 19 Jan 2018, 06:23 PM

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রাণ জাতীয় আচার প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালেতে তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

প্রতিযোগিতার অষ্টাদশ আসরে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্টের সঙ্গে দুই লাখ টাকার চেকও তুলে দেওয়া হয় পান্নার হাতে।

এছাড়া টক, ঝাল, মিষ্টি ও মিশ্র ক্যাটাগরিতে তিনজন করে আরও ১২ জন আচার প্রতিযোগিতার পুরস্কার পেয়েছেন।

টক বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন কুমিল্লার রাবেয়া আক্তার শান্তা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার উঠেছে সিলেটের হাসনাত জাহান শিমু এবং ঢাকার মনোয়ারা হকের হাতে।

নারায়ণগঞ্জের উষাণ মিষ্টি বিভাগে প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছেন; দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ঢাকার রাজিয়া খানম ও খাদিজা হোসাইন।

ঝাল বিভাগে সেরা হয়েছেন বরিশালের ইরতিফা মৌমি। তার সঙ্গে ঢাকার দিলরুবা কাকন ও সিলেটের কুমকুম হাজেরা পেয়েছেন দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার।

নারায়ণগঞ্জের আফরোজা বেগমের হাতে উঠেছে মিশ্র বিভাগের প্রথম পুরস্কার। এ বিভাগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন নীলফামারীর তাসলিমা সরকার এবং ঢাকার আসমা বেগম।

প্রতিটি বিভাগে প্রথম স্থান অধিকারীকে ৫০ হাজার টাকা, দ্বিতীয়কে ওয়াশিং মেশিন এবং তৃতীয়কে মাইক্রোওয়েভ ওভেন দেওয়া হয়।

তাদের সঙ্গে আরও ৩৫ জনকে দেওয়া হয় শুভেচ্ছা পুরস্কার।

‍‘আজকের নারী, এগিয়ে চলো’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে’র আয়োজন সাজানো হয় বর্ণিলভাবে। পুরস্কার বিতরণের ফাঁকে ফাঁকে চলে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

এই আয়োজন ঘিরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে বিভিন্ন স্টলে হরেক পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কর্মীরা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, আচার উৎসবে অতিথি হয়ে আসার মাধ্যমে ছোটবেলার সুখ স্মৃতিতে ফিরে গেছেন তিনি।

“আচারের সঙ্গে আমাদের বোধ-বুদ্ধি হওয়ার সময়ের একটা সম্পর্ক আছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের শৈশবের সম্পর্ক, বেড়ে ওঠার সম্পর্ক আর স্মৃতির সম্পর্ক। এতে স্মৃতিময় সময়ে ফিরে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।”

তিনি বলেন, “আচারের সঙ্গে কেবল স্বাদের বিষয় জড়িত নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে একজন মমতাময়ী মায়ের স্পর্শও।”

বক্তব্য দিতে এসে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরীও শোনালেন বাংলাদেশের ‘গুণী নারীদের’ তৈরি করা আচার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার আশার বাণী।

তিনি বলেন, “প্রাণের ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য আছে এই আয়োজনের সঙ্গে। পাশাপাশি তাদের এই কাজকে এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছাও আমাদের রয়েছে। আমরা চাই বাংলাদেশের বাইরেও এই আচারকে ছড়িয়ে দিতে।”

প্রতিযোগিতায় বিজয়ী নারীরা প্রাণের সুপার শপ ‌‘ডেইলি শপিং’-এ আচার বিপণনের সুযোগ পাবেন বলে জানান আহসান খান।

প্রাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, “আচার কেবল উপকরণের সঙ্গে জড়িত নয়, এতে মমতারও প্রয়োগ হয়। আমরা চাইব, এই নারীরা শুধু প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন না, বাণিজ্যিকভাবেও আচারের উৎপাদন করবেন।”

প্রাণের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এবারের প্রতিযোগিতায় সারা দেশ থেকে তিন হাজার ৬৯২ জন প্রতিযোগীর পাঠানো আট হাজার ৩০৮টি আচার থেকে বিজয়ীদের বাছাই করা হয়।

প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের বিচারক ছিলেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ফাতেমা সুরাইয়া, রন্ধন বিশারদ নাজমা হুদা, অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী নাদিয়া আহমেদ, নাট্যকার ও পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী, সংবাদ উপস্থাপিকা শামীম আরা মুন্নি, অভিনেত্রী সালেহা খানম নাদিয়া, আচার শিল্পী জেবুন্নেসা বেগম, পুষ্টিবিদ সাজেদা কাসেম জ্যোতি, সংগীত শিল্পী সাজিদা সুলতানা পুতুল ও বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার জাহানারা আলম। 

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে চ্যানেল আইয়ের মহাব্যবস্থাপক অভিনেতা শহিদুল আলম সাচ্চু, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বক্তব্য দেন।