বাস্তবায়নের অপেক্ষায় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নীতিমালা

বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মান উন্নয়নে নীতিমালা হয়েছে, যা এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষায় বলে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

গোলাম মুজতবা ধ্রুববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2018, 03:53 PM
Updated : 17 Jan 2018, 03:53 PM

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জিয়াউল হক বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবাকে নীতিমালায় আনছে সরকার। যাত্রী সেবার মান বাড়াতে এই উদ্য্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা নীতিমালায় আনতে গত বছরের নভেম্বরের দিকে বিমান মন্ত্রণালয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়।

ওই কমিটির দেওয়া নীতিমালার খসড়ায় সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব জিয়াউল।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেটি কখন বাস্তবায়ন হবে সেটা বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বিবেচনা করবে। তারা একটি আদেশ জারি করেই এই নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে পারবে।”

নীতিমালায় বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়াও অন্য যে কোনো এয়ারলাইন্স দিতে পারবে জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, এজন্য তাদের লাইন্সেস নিতে হবে এবং টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পেতে হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী লাইসেন্স নেওয়া ও তা নবায়নের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যদের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট হারে ফি দিতে হবে। এতদিন বিমানকে এজন্য কোনো টাকা দিতে হত না।

বাংলাদেশের প্রধান বিমানবন্দর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতিদিন দেশীয় চারটি বিমান সংস্থার প্রায় ৫০টি ফ্লাইট ছাড়াও ১৮টি দেশের ২৫টি বিমান সংস্থার প্রায় ১০০ উড়োজাহাজ ওঠানামা করে।

বিশ্বের অধিকাংশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সেবার মান নিশ্চিত করতে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলেও বাংলাদেশে এ কাজ করে কেবল বিমান। কিন্তু প্রশিক্ষিত ও দক্ষ লোকবল এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতার কারণে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো একাধিক প্রতিষ্ঠানকে হ্যান্ডলিং এজেন্ট হিসাবে নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছে।

নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম নাইম হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি এখনও তাদের হাতে পৌঁছেনি।

“চিঠি পেলে তাতে যে ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেটা যত দ্রুত সম্ভব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অন্যতম আয়ের খাত গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা। নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে বিমানের আয় কমবে কি না জানতে চাইলে সংস্থাটির এয়ারপোর্ট সার্ভিস বিভাগের জিএম নুরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “দীর্ঘ দিন নীতিমালা ছিল না। এবার একটি নীতিমালা হয়েছে। এটা নিয়ে জিয়া স্যার যেটা বলবেন সেটাই চূড়ান্ত। আমাদের এখানে কিছু বলার নেই।”

নীতিমালা প্রণয়নে গঠিত কমিটিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি ছিলেন নুরুল ইসলাম।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের জিএম শাকিল মেরাজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবার মান উন্নয়নে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম কিনতে বিমানের ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

কার্গো, ট্রাফিক ও সিকিউরিটি মিলে এই খাতে তাদের ১৭০০ জনবল রয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ৬৩৭ জন নতুন জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০০ জন নতুন জনবল নিয়োগের অপেক্ষায় আছে।