চাল-পেঁয়াজের দাম এখন স্বাভাবিক: বাণিজ্যমন্ত্রী

চাল ও পেঁয়াজের দাম ‘স্বাভাবিক পর্যায়ে’ এসেছে বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2018, 01:41 PM
Updated : 15 Jan 2018, 01:42 PM

সোমবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সরকারের উদ্যোগ ও দেশে নতুন পিঁয়াজের উৎপাদন শুরু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে।”

সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী পেঁয়াজের সোমবারের দাম এক সপ্তাহ আগের চেয়ে ৩১ শতাংশ কম হলেও তা গত বছরের চেয়ে ১৮০ শতাংশ বেশি।

পেঁয়াজের দাম এখন প্রতি কেজি ৫৫–৬০ টাকায় নেমে এসেছে বলে দাবি করেন তোফায়েল। তবে টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ঢাকার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭৫ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল।

দুই মাস আগে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ১০০ টাকা ছাড়ায়।

তখন বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এবার দেশে ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি ভারতে পেঁয়াজের আগাম আবাদ ভালো না হওয়াকে দাম বেড়ে যায়।

তিনি সংসদেও বলেন, “ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এবার বন্যার কারণে সেখানে উৎপাদন কম হয়েছে। বাংলাদেশেও বন্যার কারণে উৎপাদন কম হয়েছে।”

পেঁয়াজের বাজার সহনীয় করার উপর জোর দিয়ে সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, “পেঁয়াজ অনেক বেশি তেজস্ক্রিয়। চার-পাঁচ বছর আগে পেঁয়াজের কারণে দিল্লিতে সরকার পরিবর্তন হয়েছে।”

পেঁয়াজের পাশাপাশি চালের দামও স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে এসেছে দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী সংসদে বলেন, “চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯ টাকা।”

“চালের দাম বেড়েছিল। কারণ উত্তরাঞ্চল ও হাওরাঞ্চলে বন্যায় ফসলহানি হয়েছিল। মৌসুম এলেও দাম কমেনি, এটা ঠিক নয়,” বলেন তিনি।

গত বছরের এপ্রিলে হাওরে বন্যায় ফসলের ক্ষতির পর থেকে বাড়তে শুরু করে চালের দাম। সে সময় সরকারের গুদামগুলোতে চালের মজুদ ২ লাখ টনেরও নিচে নেমে আসে।

সে সুযোগে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয় বলে মন্ত্রীরা বলে আসছিলেন।

এরপর সরকার ব্যাপক আমদানি করলেও চালের দাম সামান্যই কমেছে।

টিসিবির সোমবারের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে চালের দরে কোনো হেরফের হয়নি। গত এক বছরে চালের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশের মতো।

সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর মতো খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামও বলেন, “বিশ্ব বাজারে খাদ্যের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও খাদ্যশস্যের দাম কমছে এবং বর্তমানে স্থিতিশীল পর্যায়ে আছে। বর্তমানে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৭ টাকা কমেছে এবং আটার দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।”

জনশক্তি রপ্তানি ৩ লাখ বেড়েছে

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সংসদে জানান, সরকারের নানামুখী পরিকল্পনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে।

বর্তমানে ১৬৫টি দেশে কর্মী পাঠানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “২০১৬ সালে বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১ জন। ২০১৭ সালে এটি বেড়ে ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।”

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু সংসদে প্রশ্নের জবাব দেন।

সংসদকে জানানো হয়, বর্তমান সরকারের আমলে বিদেশে ৫১ লাখ ৯৮ হাজার ৯১৪ জন কর্মী কাজ নিয়ে বিদেশে গেছেন।

মন্ত্রী জানান, ১৬টি দেশে কর্মী পাঠানোয় সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।

এগুলো হচ্ছে সিঙ্গাপুরে দুই লাখ ৬২ হাজার ২৭০ টাকা, সৌদি আরবে এক লাখ ৬৫ হাজার, মালয়েশিয়ায় এক লাখ ৬০ হাজার, লিবিয়ায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৭৮০, বাহরাইনে ৯৭ হাজার ৭৮০, আরব আমিরাতে এক লাখ ৭ হাজার ৭৮০, কুয়েতে এক লাখ ৬ হাজার ৭৮০, ওমানে এক লাখ ৭৮০ হাজার, ইরাকে এক লাখ ২৯ হাজার ৫৪০, কাতারে এক লাখ ৭৮০, জর্ডানে এক লাখ ২ হাজার ৭৮০, মিশরে এক লাখ ২০ হাজার ৭৮০, মালদ্বীপে এক লাখ ১৫ হাজার ৭৮০, ব্রুনাইয়ে এক লাখ ২০ হাজার ৭৮০ এবং লেবাননে এক লাখ ১৭ হাজার ৭৮০ টাকা।