রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে লটারির মাধ্যমে উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকের ২৬২১ জন গ্রাহকের ফ্ল্যাট আইডি ঘোষণা করা হয়। এর আগে গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর একই নিয়মে প্রথম পর্যায়ের ৮৩৭ জন গ্রাহকের মাঝে ফ্ল্যাট আইডি হস্তান্তর করা হয়েছিল।
২০১০ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আবাসন শিল্পে সরকারি উদ্যোগে এটিই দেশের সর্ববৃহ ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প।
তুরাগ নদীর পাশ ঘেঁষে বেড়িবাঁধের পাশেই এই প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকের অবস্থান। রাজউকের নকশায় উত্তর পাশে ২১০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা, দক্ষিণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলাধার, পূর্ব পাশে ৩০০ ফুট প্রশস্ত লেকের পাশে ৬০ ফুট প্রশস্ত লেক ড্রাইভ এবং পশ্চিমে ১১০ ফুট চওড়া রাস্তা রয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১০০টি ইকোনমিক জোন তৈরি করা হয়েছে। সেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান বানাতে হবে। এছাড়া গ্রামে যদি জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তাহলে বর্তমান আবাসিক স্থলে উঁচু ভবন বানাতে হবে। আর ফসলি জমি নষ্ট করতে দেওয়া হবে না।
পূর্তমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর সব বস্তিতে উঁচু ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ৫৫০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ২০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হলে সব বস্তিবাসীকে ভাড়াভিত্তিক উন্নত বসবাসের ব্যবস্থা করা যাবে।
অনুষ্ঠানে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান বলেন, উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের সবগুলো সড়কের টেন্ডার হয়ে গেছে। শিগগিরই রাস্তা নির্মাণ হয়ে যাবে। এছাড়া এই প্রকল্পের যোগাযোগ সহজ করার জন্য উত্তরা জসিম উদ্দিন সড়কের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মিরপুরের সঙ্গেও যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ এর মধ্যে যারা ফ্ল্যাটের চার কিস্তির মূল্য পরিশোধ করেছেন তাদের আইডি দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকে ৯৬ একর জমিতে ৭৯টি ১৬ তলা ভবনে ৬ হাজার ৬৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে।
ভবনের অভ্যন্তরীণ সুবিধা
রাজউকের তথ্যমতে, ‘এ’ ব্লকের প্রতিটি ১৬তলা ভবনে একটি বেইজমেন্ট, গ্রাউন্ড ফ্লোর ছাড়াও রয়েছে ১৪টি ফ্লোর। প্রতিটি ফ্লোরে ১৬৫৪ বর্গফুটের ৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে। অর্থাৎ প্রতিটি ভবনে রয়েছে ৮৪টি ফ্ল্যাট।
>> প্রতিটি ফ্ল্যাটে তিনটি বেডরুম, একটি লিভিং রুম, একটি ডাইনিং, একটি ফ্যামিলি লিভিং রুম, চারটি বারান্দা, চারটি টয়লেট ও একটি কিচেন রয়েছে।
>> প্রতিটি ভবনে পৃথকভাবে বৃষ্টিরপানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে।
>> ভবনের নিচতলায় কেন্দ্রীয়ভাবে সিলিন্ডার ব্যাংক স্থাপন করে এলপিজি গ্যাস সরবরাহ করার ব্যবস্থা থাকছে।
মো. ইসলামাইল নামের একজন গ্রাহক জানান, ২০১২ সালে তিন লাখ টাকা জামানত দিয়ে ফ্ল্যাটের আবেদন করেছিলেন তিনি। এরপর ৬ লাখ ৭১ হাজার টাকার চারটি কিস্তি পরিশোধ করেছেন। আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও চারটি কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। ফ্ল্যাট পেতে মোট ৫৬ লাখ টাকার মতো খরচ পড়বে।
উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ভবনের অবকাঠামো নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে লিফটও বসে যাবে। এরপর ভবনের পার্কিং বাবদ দুই লাখ ও ইউটিলিটি সার্ভিস বাবদ তিন লাখ টাকা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে ফ্ল্যাট হাস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে।