এস আলম গ্রুপের অর্থের খোঁজ চলছে: মুহিত

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত এস আলম গ্রুপের অর্থের উৎসের খোঁজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2017, 04:54 PM
Updated : 26 Nov 2017, 05:58 PM

রোববার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “তাদের (এস আলম গ্রুপ) ঋণ কী আছে, আমরা খোঁজ নিচ্ছি। বিশেষ করে অর্থের উৎস…।

“আমার ধারণা, বেশিরভাগ অর্থই অন্য ব্যাংক থেকে ধার করা। আমরা খবর-টবর নিচ্ছি। সারা দেশে তাদের সম্পদের পরিমাণ কত, তা জানার চেষ্টা করছি। তাদের আয় সম্পর্কেও জানতে উদ্যোগ নিয়েছি।”

বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক এখন এস আলম  গ্রুপ। এই গ্রুপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নামে কেনা হয়েছে এই সব শেয়ার।

একইভাবে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডেরও (এসআইবিএল) বেশিরভাগ শেয়ার কিনে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ।

এছাড়া বেসরকারি খাতের আরও কয়েকটি ব্যাংকের মালিকানা কিনে নেওয়ার খবরও গণমাধ্যমে এসেছে।

এস আলম  গ্রুপ কি ব্যাংকগুলো দখল করে নিচ্ছে- এক সাংবাদিকের এই প্রশ্নের উত্তরে মুহিত বলেন “বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। তারা কী করছে, না করছে, তা দেখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে বলেছি।”

কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের মালিকানাও কিনে নিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এই গ্রুপের নামে আরও টিভি চ্যানেলের লাইসেন্সও রয়েছে।

রোহিঙ্গাদের জন্য বাজেট বরাদ্দ

আগামী বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা চলতি বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু করেছি। একইসঙ্গে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের আকার নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।আগামী বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি পৃথক বরাদ্দ রাখা হবে।”

মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে গত তিন মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। আগে থেকে বাংলাদেশে আছে ৪ লাখের বেশি।

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে মিয়ানমারের উপর চটে থাকলেও মুহিত কিছু দিন আগে বলেছিলেন, শরণার্থীদের কারণে বাজেটে চাপ পড়বে বলে তিনি মনে করেন না।

সংশোধিত বাজেট

আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিল ও সম্পদ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে এসে চলতি অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের ধারণাও দেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের আকার ৩ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকার মতো হবে।

মুহিত বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের (জুলাই-অক্টোবর) বাজেট বাস্তবায়নের হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ভালো। এই ভালোটা হয়েছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন ভালো হয়েছে বলে।

“রাজস্ব সংগ্রহের পরিস্থিতিও গত বছরের চেয়ে বেশ ভালো। গত বছর গ্রোথ ছিল ১১ শতাংশ, এ বছর আশা করছি ৩০ শতাংশ হবে। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো।”

এনবিআরকে টিআইএন নম্বরধারী ২৫ লাখে উন্নীত করার লক্ষ্য মাত্রা দিয়ে তা ছাড়ানোয় সন্তোষও প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।

“সেটা হয়ে গেছে ৩২ লাখ। বাংলাদেশের উজ্জ্বল যুবকরা মনে করে এটা তাদের দায়িত্ব। দেশকে টাকা দেওয়া দরকার। এটা দারুণ খুশির খবর।”

মুহিত বলেন, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটকে সামনে রেখে নতুন বাজেট প্রণয়ন করা হবে। সে হিসাবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার মতো।

চলতি বছরের বাজেটের আকার ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা, যা সংশোধন করে ৩ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে তা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

চলতি অর্থবছরে বাজেটে ধরা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৪ শতাংশ অর্জিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মুহিত।

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংক গর্ভনর ফজলে কবির, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।