ফোরজি: ‘প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায়’ রূপান্তর ফি কমছে

মোবাইল ফোন অপারেটরদের দাবির মুখে বরাদ্দ দেওয়া তরঙ্গ ‘প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায়’ রূপান্তরের খরচে ছাড় দিচ্ছে সরকার।

শামীম আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2017, 03:51 PM
Updated : 19 Oct 2017, 03:51 PM

পাশাপাশি টেলিযোগাযোগে চতুর্থ প্রজন্মের (ফোর জি) নীতিমালায় কল রেকর্ড ১২ বছর রাখার সিদ্ধান্তেও ছাড় দেওয়া হতে পারে বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের কথায় ইঙ্গিত মিলেছে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিতিতে বৈঠক শেষে এ বিষয়ে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।

তারানা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফোরজির বিষয়ে অপারেটররা ২৪টি ‘কনসার্ন’ ব্যক্ত করেছিলেন, এর মধ্যে কিছু ছোট ছোট বিষয় আছে যেগুলো ব্যাখার মাধ্যেমে সমাধান করা সম্ভব। বিটিআরসি এসব ব্যাখ্যা দিয়েছে টেলিযোগাযোগ বিভাগে, আমরা গ্রহণও করেছি, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠিয়ে দেব।

“কিছু কিছু বিষয়ে তারা রিভিজিট করতে বলেছে। এর মধ্যে দুটি বড় আকারের একটি হচ্ছে তরঙ্গের টেক নিউট্রালিটি কনভার্সন ফি, আরেকটি হচ্ছে সিডিআর রেকর্ড ১২ বছর রাখবে কি না। সিডিআর রেকর্ড ১২ বছর রাখবে কি না তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা বলে বিবেচনায় নেব।

“কনর্ভাসন ফির বিষয়ে বিটিআরসি অপারেটরদের সাথে কথা বলে একটি সমাধান দেবে, যেটি অপারেটরের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং সরকারও লাভবান হবে।”

গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদন পাওয়া এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত নীতিমালায় বরাদ্দকৃত তরঙ্গ প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায় রূপান্তরে প্রতি মেগাহার্টজে সাড়ে সাত মিলিয়ন ডলার ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল।

বৈঠকে উপস্থিত টেলিযোগাযাগ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “ওই ফি কমিয়ে ৩ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে রাখার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।”

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম (ফাইল ছবি)

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফোরজি নীতিমালা নিয়ে অপারেটরদের ছোট ছোট যে সব ‘ইস্যু’ ছিল সেগুলোর মীমাংসা হয়েছে।

“বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা বলে এসব সংযুক্ত করা হবে।”

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “অপারেটররা বলছিল, তাদের সিএসআর ফান্ড ব্যবহারে পূর্বানুমতি নেওয়ার প্রয়োজনের বিষয়ে। আমরা বলেছি, পূর্বানুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই, ব্যবহারের পর বিটিআরসিকে অবহিত করলেই চলবে।”

তবে ফোরজি রোল আউট অবলিগেশন এবং ফোরজি গতির বিষয়ে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, “বিটিআরসিকে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট মান নির্ধারণ করতে। উপদেষ্টাও বলেছেন, এই দুই বিষয়ে ছাড় দেওয়া হবে না।”

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ফোরজি চালুর লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “এ পর্যন্ত যতগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা হচ্ছে, হয়ত দুই-একমাস পরে হয়েছে। এমএনপি চালু হবে তা সময়ের ব্যাপার, সেবার মান বাড়াতে টেক নিউট্রালিটি দিচ্ছি, অপারেটরদের সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।

“অপারেটররা ইন্টারনেট স্পিড ও মানের ব্যাপারে কমপ্রোমাইজ করতে পারবে না। প্রয়োজনে কনভার্সন ফি কমিয়ে হলেও অপারেটরদের সব তরঙ্গ প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায় নিয়ে আসুক- এ ধরনের চিন্তাভাবনা আছে।

“অপারেটররা যেন বলতে না পারে উন্নতমানের সেবা দেওয়ার মতো তরঙ্গ তাদের নেই। প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা পেলে তারা আগামীতে যে কোনো প্রযুক্তিতে চলে যেতে পারবে। এজন্য আমরা চাই অপারেটরা সব তরঙ্গ প্রযুক্তি নিরপেতক্ষতায় রূপান্তর করুক।”

মোবাইল সেবায় মূল্য পুর্নর্নির্ধারণ করা হবে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না যাতে গ্রাহক পর্যায়ে দাম বৃদ্ধি পায়। এ রকম দু-তিনটি ফাইল আমার কাছে ছিল আইএসপি লাইসেন্স এর মূল্য বৃদ্ধি, কলের ট্যারিফ সিদ্ধান্ত আমার কাছে ছিল।

“এ বিষয়ে উপদেষ্টাও একমত প্রকাশ করে বলেছে, যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে। আমরা চাই এই খাতের গ্রোথ এবং এই পর্যায়ে এ বিষয়গুলোতে হাত দেব না।”