বিটিআরসির অলস টাকায় তাৎক্ষণিক সেবা ‘১১১’

উন্নত দেশগুলোর মত নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক সেবা দিতে এবার ‘১১১’ হেল্পলাইন চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।

শামীম আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Sept 2017, 06:16 AM
Updated : 14 Sept 2017, 06:16 AM

এ পরিকল্পনায় জরুরি প্রয়োজনে ‘১১১’ নম্বরে কল করলেই অবস্থান শনাক্ত করে সহায়তার জন্য উপস্থিত হবে সংশ্লিষ্টরা।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে পড়ে থাকা অলস টাকায় এ প্রকল্প নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ পরিকল্পনায় কোথায় কেউ বিপদে পড়লে ‘১১১’ নম্বরে কল দেওয়ামাত্র অবস্থান শনাক্ত করে সেখানে সহায়তাকারী দল উপস্থিত হবে।

“‘১১১’ কল দিয়ে পুনরায় কোনো নম্বরে কল দিতে হবে না, ১১১ তে কল দেওয়া মাত্র সংশ্লিষ্টরা বুঝতে পারবে সে বিপদে পড়েছে।

কল করা মাত্র মোবাইল ফোন অপারেটরদের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করে সহায়তাকারী একটি দল সেখানে যাবে।”

কলকারী ব্যক্তির অবস্থান শনাক্তে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে তারা জানিয়েছে। আমরা দেখেছি এটি সম্ভব।”

আলাদাভাবে একটি ইউনিট করে এ সহায়তাকারী দল করার পরিকল্পনার কথাও বলেন প্রতিমন্ত্রী।

গত বছর ১ অক্টোবর পরীক্ষামূলকভাবে জরুরি সেবার হটলাইন ৯৯৯ চালু করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা জাতীয় ন্যাশনাল হেল্প ডেস্ক ৯৯৯ এর দায়িত্ব তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে যাচ্ছে।

জাতীয় হেল্পডেস্ক নামে ৯৯৯ সেবা এর যাত্রা শুরু হলেও পরে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস নাম হয়, যার আওতায় জরুরি সেবা ছাড়াও প্রয়োজনীয় সরকারি সেবা এবং জীবন ও জীবিকা বিষয়ক তথ্য পরামর্শ দেওয়ার লক্ষ‌্য নেওয়া হয়।

৯৯৯ নম্বরের জরুরি সেবায় আইনশৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য ও অগ্নি নির্বাপন সংক্রান্ত- কোন ধরনের সেবা প্রয়োজন সেটি কল করে জানাতে হয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম (ফাইল ছবি)

তবে ১১১ সেবায় কল করা ব্যক্তি নিজের বিপদ সম্পর্কে কিছু বলতে না পারলেও তাৎক্ষণিকভাবে তার অবস্থান শনাক্ত করে সেখানে পৌঁছে যাবে সহায়তাকারীরা।

বিটিআরসির সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে (এসওএফ) পড়ে থাকা অলস টাকায় ১১১ সেবার এ উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, এছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বিঘ্ন টেলিযোগাযোগ সেবা দিতে ফাইবার অপটিক কেবল সংযোগ এবং ডিজিটাল ভিলেজ নির্মাণে এ অর্থ ব্যয়ের প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “এসওএফ কীভাবে ব্যবহার হবে সেজন্য কমিটি আছে এবং সে কমিটির প্রধান প্রধানমন্ত্রী। কমিটিতে এ প্রস্তাব উপস্থাপনের পর অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা যাবে।

“‘১১১’ সেবা পরিকল্পনা প্রাথমিকভাবে নেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারে অনুমোদন পাওয়ার পর এ উদ্যোগে কি পরিমাণ খরচ হতে পারে তা নির্ধারণ করা হবে।”

মোবাইল ফোন অপারেটরদের মোট আয়ের এক শতাংশ কেটে নিয়ে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল গঠন করে বিটিআরসি। এরপর থেকে ওই তহবিলে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা জমা হয়েছে।

অলস পড়ে থাকা এই টাকায় ওয়াইফাই হটস্পট, দুর্গম এলাকায় ইন্টারনেট এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেলিযোগাযোগ সেবায় ব্যয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল ডাক ও টেলিযোগাযাগ বিভাগ।

ইতোমধ্যে বিটিআরসির এসওএফ থেকে ৬৫২ কোটি টাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে নির্বিঘ্ন টেলিযোগাযোগ সেবা দিতে ফাইবার অপটিক কেবল সংযোগ স্থাপনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একটি প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।