আঞ্চলিক সহযোগিতায় জোর বাণিজ্যমন্ত্রীর

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দারিদ্র দূরীকরণ ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বহুমুখী বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার জোরদারের তাগিদ দিয়ে ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোকে ‘প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট’ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2017, 01:59 PM
Updated : 3 Sept 2017, 01:59 PM

শুক্রবার রাতে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের দ্বিতীয় ভারত মহাসাগর সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।  

তিন দিনের এ সম্মেলনের বিশেষ প্ল্যানারি সেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অর্ধেক কনটেইনারবাহী জাহাজ, এক তৃতীয়াংশ কার্গো জাহাজ এবং দুই তৃতীয়াংশ তেলবাহী ট্যাংকার ভারত মহাসাগর হয়ে চলাচল করে।

“বাণিজ্যিক দিক থেকে এ অঞ্চল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই এ অঞ্চলের নিরাপত্তা, পাইরেসি ও সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।’

প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাণিজ্যিক জাহাজের নিরাপদ চলাচলের মাধ্যমে বাণিজ্য উন্নয়ন ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “এ ক্ষেত্রে সাফটা, বিমসটেক, আসিয়ান-এর মতো বাণিজ্যিক জোটগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। এ জন্য ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশগুলো প্রেফারেনশিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) করার কথা চিন্তা করতে পারে। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সমুদ্রপথে বাণিজ্য এখন অনেক বেশি নিরাপদ ও সম্ভাবনাময়।”

ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে বিশ্বের সবচেয়ে দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে বর্ণনা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিশ্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যে মানবিক বিপর্যয় ঘটে, তার ৭০ শতাংশ হয় এ অঞ্চলে। সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানী ঘটেছে। তবে সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে এ ধরনের ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

তিনি এ অঞ্চলের মানুষের টেকসই উন্নয়নের জন্য ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের কাজের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘পিস, প্রোগ্রেস অ্যান্ড প্রসপারিটি’। সম্মেলনে ২৯টি দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত বছর প্রথম সম্মেলন হয়েছিল সিঙ্গাপুরে।

ভারতের ইনস্টিটিউট অফ চায়নিজ স্টাডিজের পরিচালক সাবেক রাষ্ট্রদূত অশোক কান্থার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী পর্বে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান বক্তব্য দেন।

অন্যদের মধ্যে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কৃষ্ণা বাহাদুর মাহারা, মরিশাসের সমুদ্র বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী প্রেমদূত কনজো, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিলক মারাপানা ও জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক পারলামেন্টারি ভাইস-মিনিস্টার আইওয়া হোরি বক্তব্য দেন এ সম্মেলনে।