ক্ষমতায় থাকতে বিএনপির সাথেও ভারতের ভালো সম্পর্ক ছিল: তোফায়েল

ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনার কোনো ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2017, 04:43 PM
Updated : 19 August 2017, 04:47 PM

আঞ্চলিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ নিয়ে শনিবার এক সেমিনারে তিনি বলেন, “বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ভারতের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক ছিল।

“এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়, তাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। এটা মূলত সরকার টু সরকার, এটা পার্টি টু পার্টি নয়।”

ভারতের সঙ্গে দলীয়ভাবে নয়, সরকারের সঙ্গে সরকারের ভালো সম্পর্ক বলে মন্তব্য করেন তোফায়েল।

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারাও ভারতে গেছেন। তারাও তো লালগালিচা সংবর্ধনা পেয়েছেন।”

জাতীয় বিভিন্ন বিষয়েও বাংলাদেশের রাজনীতিকদের মধ্যে ঐক্য না থাকার সমালোচনা করেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশই একটা দেশ যেখানে রাজনৈতিক ঐক্যবদ্ধতা নেই।রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন থাকতেই পারে। পৃথিবীর সবদেশেই এরকম থাকে। ভারত-পাকিস্তানেও তা আছে।

“কিন্তু তারপরে তাদের সকল রাজনৈতিক দলের নেতারাকী করতে হবে তা নিয়ে একসাথে বসেন।দেখা যাবে তাদের মধ্যেও আমাদের মতো সমস্যা হয়।তারপরও তারা একসঙ্গে বসেন।”

নানা শুল্ক ও অশুল্ক বাধার কারণে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

এর উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ভারতের প্রয়োজন থাকায় কাঁচা পাটের ওপর তারা এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে না।…আবার পাটের ফিনিশড প্রোডাক্টের ওপর এন্টিডাম্পিং আছে কারণ ওইটা তাদের আছে।

“অর্থাৎ যেসব পণ্য তাদের দেশে দরকার সেসব পণ্যের ওপর এন্টি ডাম্পিং করে না।”

দেশীয় শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন পণ্যের ওপর অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক আরোপের কথা তুলে ধরেন তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেন, “১৯৯৬ সালে যখন বাণিজ্যন্ত্রী হয়েছিলাম তখন ৯ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদন হত। সেই সিমেন্ট এবার উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি টন।

“ক্লিংকার আমদানির ওপর শুল্ক কমিয়ে ফিনিশড সিমেন্টের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছি।যার কারণে শাহ সিমেন্ট বা মেঘনা সিমেন্টের মতো বড় বড় কোম্পানি দেশে গড়ে উঠেছে।”

নিউ ইস্কাটনের বিআইআইএসএস মিলনায়তনে অধ্যাপক আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে অন্যদের মধ্যে ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও চীনের এইচইউএসটি স্কুল অব ইকোনমিকসের শিক্ষক শহীদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি বাড়ানোর মাধ্যমেই আমাদের উন্নয়নের বিশাল সুযোগ রয়েছে।এটা শুধুই বাণিজ্য নয়, এটা আসলে বিনিয়োগ। আমাদের যে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো করা হচ্ছে সেগুলো কাজে লাগাতে পারলে বিপুল বিনিয়োগ আসবে।”

আসিফ ইব্রাহিম বলেন, “আমাদের এখন পূর্বমুখী হওয়ার সময়ে এসেছে।এখন দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্ডিয়া, নেপাল (বিবিআইএন)উপআঞ্চলিক জোটের তুলনায় বিসিআইএম (বাংলাদেশ, চীন, ইন্ডিয়া, মিয়ানমার) অনেক বেশি কার্যকর হবে।”

তিনি বলেন, “মিয়ানমারে বিপুল পরিমাণ গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছে। সেই মজুদকৃত গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।সে বিদ্যুৎ দিয়ে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে।”

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, “দেশের উৎপাদন বাড়াতে হলে শ্রমিকদের পুষ্টির যোগান বাড়াতে হবে। যাদের শ্রমিক যত বেশি পুষ্টি পায়, তাদের উৎপাদন ক্ষমতা তত বেশি।”