শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার ঢাকা সফর শেষে শনিবার দুই দেশের প্রধান নির্বাহীর মধ্যে এক যৌথ বিবৃতিতে এই ঘোষণা এসেছে।
বাংলাদেশে তিন দিনের সফর শেষে শনিবার ঢাকা ছাড়েন সিরিসেনা; হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানা পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
বিবৃতিতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় ‘গভীর সন্তুষ্টি’ প্রকাশ করেছেন।
এই সফরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কৃষি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, উচ্চ শিক্ষা ও আর্থিক বিষয়সহ সার্বিকভাবে দুই দেশের জনগণের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ স্থাপনে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।
শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল গড়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তারা।
উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রক্রিয়াগুলোর গভীরতর করার বিষয়ে একমত হন তারা; বিমসটেক ও সার্কের আওতায় লক্ষ্যভেদী ও ফলাফলমুখী আঞ্চলিক সহযোগিতা স্থাপনে কাজ করার উপর জোর দেন।
সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা ও যে কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক আবরণে উগ্রবাদীকরণ থেকে সৃষ্ট হুমকির বিষয়টি আমলে নিয়ে দুই দেশ ও এর বাইরে এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে নেতারা একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন সিরিসেনা ও হাসিনা। এর ফলে ২০১৭ সালের শেষে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) চূড়ান্ত করার পথ সুগম হবে বলে তারা বিশ্বাস করেন।
যৌথ উদ্যোগ ও পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বাড়ানোর মাধ্যমে উভয় দেশ থেকে বিনিয়োগের সুফল পেতে পারে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত নৃশংসতার কথা স্মরণ করেন দুই নেতা। ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সংসদে নেওয়া প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তারা বাংলাদেশের নিরপরাধ ও মুক্তিকামী জনতার উপর বিস্মরণীয় নির্যাতনের স্বীকৃতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
শুক্রবার সকালে সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে টাইগার গেটে শেখ হাসিনা তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন।
প্রতিবেশী এই দুই দেশের নেতা প্রথমে একান্ত বৈঠকে অংশ নেন। তারপর দুই দেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলি হলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন। শেষে করবীতে দুই নেতার উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। সেখানে তার সম্মানে দেওয়া এক ভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ছিলেন।
শনিবার ঢাকা ছাড়ার আগে একটি বাণিজ্য বিষয়ে একটি সংলাপে অংশ নেন তিনি।