দেশে সংযোজিত গাড়িতে উচ্চ শুল্ক, হাইব্রিডে ছাড়

প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন শুল্ক কাঠামোর কারণে হাইব্রিড গাড়িতে বড় ছাড় দেওয়া হলেও দেশে সংযোজিত গাড়ির দাম বেড়ে যাবে।

রিয়াজুল বাশারও ফারহান ফেরদৌসবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 June 2017, 06:53 PM
Updated : 2 June 2017, 01:08 PM

চেসিসসহ ইঞ্জিন আমদানির ক্ষেত্রে এতদিন শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকলেও নতুন বাজেটে প্রকারভেদে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ইঞ্জিন ক্ষমতার ভিত্তিতে বিদ্যমান স্ল্যাব বিন্যাস ভেঙে নতুন শুল্কহার প্রস্তাব করায় দুটি স্ল্যাবে কিছু সেডান গাড়ির দাম কমতে পারে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের এই নতুন বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। 

তিনি মোটর সাইকেলের আমদানি শুল্ক অপরিবর্তিত রেখে যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করায় দেশে সংযোজিত এই দুই চাকার মোটরযানের দাম কমতে পারে। 

কিন্তু দুই ও চার স্ট্রোক ইঞ্জিনের তিন চাকার অটোরিকশা আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করায় দাম বাড়বে।

এ ধরনের অটোরিকশার চেসিসসহ ইঞ্জিন আমদানির ক্ষেত্রেও শুল্ক হার ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করেছেন অর্থমন্ত্রী।

মাইক্রোবাস, স্টেশন ওয়াগন, এসইউভি, পিকআপ ও বিভিন্ন মোটর গাড়ির চেসিসসহ ইঞ্জিন আমদানিতে বিভিন্ন স্ল্যাবে ২৫ থেকে ৩৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেগুলোতে এতদিন কোনো সম্পূরক শুল্ক ছিল না।

গাড়ি ব্যবসায় যুক্ত একজন ব্যবসায়ী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যারা বিদেশ থেকে চেসিস এনে বডি সংযুক্ত করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক মান রাখতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরে তারা শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে এলেও গাড়ি সংযোজনের ক্ষেত্রে মানের উন্নতি করতে পারেননি।    

“বাজারে প্রতিযোগিতা সৃষ্টির জন্যই সরকার হয়তো চেসিস-ইঞ্জিনে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

নতুন স্ল্যাব বিন্যাসে বিদেশ থেকে সম্পূর্ণ তৈরি আমদানি করা কিছু গাড়ির দাম কমতে পারে।

১৬০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৫ শতাংশ। বর্তমানে এই শুল্ক হার ১৫০০ সিসি পর্যন্ত প্রযোজ্য।

তার মানে, ১৫০০ থেকে ১৬০০ সিসির গাড়ি ১০০ শতাংশ শুল্কের বদলে ৪৫ শতাংশে চলে আসায় এ ধরনের গাড়ির দাম কমছে।

এই কাঠামোতে ১৬০১ থেকে ২০০০ সিসির গাড়িতে আগের মতেই ১০০ শতাংশ হারে শুল্ক লাগবে।

বর্তমানে ২০০১ থেকে ২৭৫০ সিসির গাড়িতে ২০০ শতাংশ এবং ২৭৫০ থেকে ৩০০০ সিসির গাড়িতে ৩৫০ শতাংশ শুল্ক রয়েছে।

নতুন প্রস্তাবে ২০০১ থেকে ৩০০০ সিসির গাড়িকে  এক স্ল্যাবের আওতায় এনে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ, ২৭৫০ থেকে ৩০০০ সিসির গাড়ি আমদানিতে শুল্ক এবং দাম কমছে।

যেসব গাড়ির যন্ত্রাংশ বাইরে থেকে এনে (সিকেডি) দেশে যুক্ত করা হয়, সেসব গাড়ির দাম বাড়তে পারে নতুন বাজেটে।

১৬০০ সিসি পর্যন্ত ক্ষমতার গাড়িতে শুল্কহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হলেও বাকি স্তরগুলোতে শুল্ক বাড়িয়ে ৩৫০ শতাংশ পর্যন্ত করার প্রস্তাব এসেছে।

অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানি সাশ্রয়ী হাইব্রিড (একাধিক জ্বালানিতে চলে) গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কহার প্রতিটি স্তরেই কমানোর প্রস্তাব করায় এ ধরনের গাড়ির দাম কমতে পারে।